ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিক্ষককে মেরে ক্ষমা চাইলেন ছাত্রলীগ নেতারা

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: জানুয়ারী ১৭, ২০২৪, ০৩:৪০ দুপুর  

ছবি সংগৃহীত

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল সরকারি ছাইদ আলতাফুন্নেছা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক জান্নাতুল ফেরদৌস রনিকে মারপিটের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন ছাত্রলীগের নেতারা। কলেজের অধ্যক্ষ জিনাত রেহেনা এ কথা জানান।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে দুই পক্ষের বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এ সময় অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মেহেদী আশিক রাজু ও যুগ্ম আহ্বায়ক জুল আরশ শুভ নিজেদের ভুল স্বীকার করে শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস রনির হাত ধরে ক্ষমা চেয়েছেন।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দিয়েছেন এমন অভিযোগ তুলে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী আশিক রাজু ও জুল আরশ শুভ দলবল নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে ক্ষেতলাল কলেজ সড়কের মৎস্য খামারের সামনে শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস রনিকে বেধড়ক মারপিট করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় কলেজের শিক্ষকেরা ক্ষেতলাল থানার সামনে মানববন্ধন করেন। মারধরের শিকার ওই শিক্ষক বাদি হয়ে ক্ষেতলাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ক্ষেতলাল উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মেহেদী আশিক রাজু ও যুগ্ম আহ্বায়ক জুল আরশ শুভকে আসামি করা হয়। এ মামলায় তারা রোববার আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মজিদ মোল্লা, ক্ষেতলাল পৌরসভার সাবেক মেয়র সিরাজুল ইসলাম বুলু, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মেহেদী আশিক রাজু ও যুগ্ম আহ্বায়ক জুল আরশ কলেজে আসেন। তারা কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে বসেন। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস রনি ও অন্য শিক্ষকেরা অধ্যক্ষের কক্ষে আসেন। দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার পর ছাত্রলীগ নেতারা নিজের ভুল স্বীকার করে শিক্ষকের হাত ধরে ক্ষমা চান। এ ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি ঘটবে না বলে আওয়ামী লীগের নেতারা কলেজের শিক্ষকদের আশ্বস্ত করেন।

ভুক্তভোগী কলেজ শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস রনি বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা হাত ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। আমি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। কলেজের অধ্যক্ষ জিনাত রেহেনা বলেন, ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে স্থানীয় ছাত্রলীগের দুই নেতা আমাদের কলেজের শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস রনিকে মারধর করেছিল। এ ঘটনার প্রতিবাদে আমরা মানববন্ধন করি। আজকে কলেজে সমঝোতার বৈঠক হয়েছে। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে আপস রফা হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। মামলার বিষয়টি দুপক্ষ দেখবেন।

ক্ষেতলাল পৌরসভার সাবেক মেয়র সিরাজুল ইসলাম বুলু বলেন, কলেজের শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাদের ঝামেলা হয়েছিল। আজকে দুই পক্ষকে নিয়েই বিষয়টি মিটমাট করা হয়েছে। ছাত্রলীগের দুই নেতা ওই শিক্ষকের হাত ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। মামলা প্রত্যাহার করে নিবেন বলে তারা জানিয়েছেন। ক্ষেতলাল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ক্ষেতলাল কলেজের শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস রনির দায়ের করা মামলায় দুই আসামি রোববার আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।