মহাসড়কে মাইক্রোবাসে যাত্রী উঠিয়ে ডাকাতি, পুলিশের হাতে গ্রেফতার ২
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৩, ০৬:০৬ বিকাল
ছবি সংগৃহীত
মাইক্রোবাসে যাত্রী উঠিয়ে পরবর্তীতে জিম্মি করে ডিজিটাল ফাইন্যান্স সেবা নগদের মাধ্যমে অপহরণের টাকা আদায় অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেফতার। হ্যা এমন সিনেমার মতো ঘটনা ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের এক প্রেস ব্রিফিং-এ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায় গত ১২ নভেম্বর ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ঢাকা বরিশাল মহাসড়কের উপর থেকে একটি নোয়া মাইক্রোবাস শহিদুল কাজী নামে এক যাত্রীকে উঠান। যতক্ষণে তিনি বুঝতে পেরেছেন তিনি ডাকাতের কবলে পরেছেন ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে । হাত পা বেঁধে পরিবারের নিকট মুক্তপন দাবি করেন। দফায় দফায় ৪৩ হাজার টাকা ডিজিটাল ফাইন্যান্স সেবা নগদের মাধ্যম আদায় করে। পরে মুক্তিপণের জন্য আরো ৫ লাখ টাকা দাবি করে। পরে পরিবারের লোকজন ভাঙ্গা থানা পুলিশের কাছে বিষয়টি জানান।
তাৎক্ষনিক তৎপরতা শুরু করে ভাঙ্গা থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম। পুলিশ তথ্যগত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আসামীদের গতিবিধি পর্যালোচনা করে ভাঙ্গা থানা এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় চেকপোষ্ট স্থাপন করে তল্লাশী শুরু করে। পুলিশি তৎপরতা বুঝতে পেরে আসামীরা তাদের গাড়ীতে থাকা ভিকটিমকে ভাঙ্গা থানার পুলিয়া এলাকায় নির্জন রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়া। এরপর দ্রুত বেগে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ভাঙ্গার দিকে আসতে থাকে। আসামীদের বহনকারী নোয়া মাইক্রোবাসটিকে টোল প্লাজায় চেকপোষ্ট স্থাপনকারী পুলিশ সদস্যরা থামানোর সংকেত দিলে গাড়ীটি টোল প্লাজার ব্যারিয়ার ভেঙ্গে দ্রুত বেগে পালিয়ে যেতে থাকে। পরবর্তীতে পুলিশের পিকআপ গাড়ীটিকে ধাওয়া করে।
এক পর্যায়ে গাড়ীটি ভাঙ্গা থানার হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ এলাকায় ঢাকা-খুলনা হাইওয়ে রোডে স্থাপনকৃত চেকপোষ্ট এর কাছে এসে চেকপোষ্টে কর্তব্যরত পুলিশের তৎপরতা দেখে গাড়ী থামিয়ে গাড়ী থেকে নেমে পালানোর চেষ্টাকালে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা ০২(দুই) জন ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেফতার করে। অন্যান্য আসামীরা অন্ধকারে পালিয়ে যায়।
আটককৃত আসামীরা হলেন, বরগুনার সদর উপজেলার সার বালিয়া এলাকার মৃত মনেছ আলী আকনের পুত্র শাহ্ আলম আকন ওরফে কালু (৩৫), বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার টাবাধায় এলাকার মৃত হাতের আলীর পুত্র মো. আবুল কালাম (৫০)
পরবর্তীতে আটক আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। আসামীদের দেহ তল্লাশীকারে আসামীদের নিকট থেকে উপরে বর্নিত লুণ্ঠিত মালামালসহ ডাকাতীর কাজে ব্যবহৃত গাড়ী এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। আসামীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভিকটিমকে পুলিয়া এলাকা থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করা হয়। ভিকটিমের ভাই পরবর্তীতে আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে ভাঙ্গা থানায় একটি ডাকাতি মামলা রুজু হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামীরা ভাঙ্গা গোলচত্ত্বরসহ মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার যোগে যাত্রীবেশে বিভিন্ন লোকজনদের গাড়ীতে তুলে নিয়ে তাদেরকে মারপিট করে তাদের নিকট থাকা টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে যায় এবং তাদেরকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন মোবাইল এপস এর মাধ্যমে তাদের পরিবারের নিকট থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে থাকে।
এই ঘটনায় অন্যান্য আসামীদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আটককৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে।