রুমে ডেকে আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন স্যার : চবি ছাত্রী
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৪, ১০:৩৫ রাত
ছবি সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেছেন এক শিক্ষার্থী। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ হিসেবে ব্যানার, ফেস্টুন হাতে ওই শিক্ষকের বিচারের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে বিজ্ঞান অনুষদের রসায়ন বিভাগের জৈব শাখার অধ্যাপকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী বলেছেন, ‘আমি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে মাস্টার্সের থিসিস করছি। থিসিস চলাকালে আমার সুপারভাইজারের মাধ্যমে যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হই। থিসিস শুরু হওয়ার পর থেকে আমার সঙ্গে তিনি বিভিন্ন যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করেন।
ওই ছাত্রী আরও বলেন, জোর করে হাত-পা চেপে ধরা, শরীরের বিভিন্ন অংশে জোরপূর্বক স্পর্শ করাসহ অসঙ্গত ও অনুপযুক্ত শব্দ ব্যবহার করেছেন। কেমিক্যাল আনাসহ আরও বিভিন্ন বাহানায় আমাকে রুমে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক জাপটে ধরতেন। গত ৬ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে আমি ল্যাবে একা কাজ করা অবস্থায় তিনি জোর করে জড়িয়ে ধরেন। এরপর ১৩ জানুয়ারি নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনা প্রকাশ না করতে ওই শিক্ষক বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছেন। এ অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। একই সঙ্গে আমার পক্ষে এ গবেষণাগারে থিসিসের কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপক বলেন, ‘এমনিতেই আমি বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ নিয়ে আছি, তার ওপর এ অভিযোগ। ৩১ বছরের শিক্ষকতা জীবন পার করছি, কিন্তু এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়নি। আমার বিরুদ্ধে একটি ভয়ংকর অভিযোগ তুলেছে, যার সঙ্গে আমার বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, ওই ছাত্রী বিভিন্ন সময় আমার ঘরে আসত। আমার স্ত্রীর সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক। আমার বয়স হয়ে গেছে। এ ধরনের ঘটনা আমি কেন করব। আমার এক ছাত্রর কাছ থেকে দুপুরে অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। থিসিসের কারণে বিভিন্ন সময় কেমিক্যাল চাইতো ছাত্রীটি। আমি অনেক ক্ষেত্রে দিইনি। হয়তো সে কারণে আমার সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য এই চেষ্টা বলে জানান অধ্যাপক।’
এ বিষয়ে রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান দেবাশীষ পালিত জানান, শিক্ষক হিসেবে আমাদের কাছে বিষয়টি লজ্জার। ঘটনার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
উপাচার্য শিরীণ আখতার বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।