ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শামারের ম্যাজিক বোলিং নৈপুণ্যে ২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জিতলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ

স্পোর্টস ডেস্ক

 প্রকাশিত: জানুয়ারী ২৮, ২০২৪, ০৭:৩৩ বিকাল  

ছবি সংগৃহীত

পেসার শামার জোসেফের ম্যাজিক বোলিংয়ে ২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট ম্যাচ জিতলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 
উত্তেজনাপূর্ণ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক  অস্ট্রেলিয়াকে। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জিতেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৮ রানে ৭ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক শামার। এই জয়ে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করলো ক্যারিবীয়রা। এই জয়ের মাধ্যমে ১৯৯২ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজে হারও এড়াতে পারলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্ট তিনদিনে ১০ উইকেটে হেরেছিলো ক্যারিবীয়রা। 
ব্রিজবেনে দিবা-রাত্রির টেস্ট জিততে শেষ দু’দিনে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিলো ১৫৬ রান। অপরদিকে, সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিলো ৮ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছুঁড়ে দেওয়া ২১৬ রানের টার্গেটে তৃতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ৬০ রান করেছিলো অসিরা। স্টিভেন স্মিথ ৩৩ ও ক্যামেরুন গ্রিন ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। 
আজ চতুর্থ দিনের শুরু থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেন স্মিথ ও গ্রিন। দলের  রান ১শও পার করে ফেলেন তারা। ইনিংসের ৩১তম ওভারে দ্বিতীয়বারের মত আক্রমনে এসে শেষ দুই বলে উইকেট তুলে নেন শামার। গ্রিনকে ৪২ রানে ও ট্রাভিস হেডকে শূণ্যতে বোল্ড করেন শামার। তৃতীয় উইকেটে স্মিথের সাথে ৭১ রানের জুটি গড়েন গ্রিন। 
এরপর নিজের চতুর্থ ওভারে আবারও অস্ট্রেলিয়া শিবিরে আঘাত হানেন শামার। মিচেল মার্শকে ১০ রানে বিদায় দেন তিনি। পরের ওভারেও উইকেট শিকার অব্যাহত রাখেন শামার। উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারিকে ২ রানে বোল্ড করেন এই ডান-হাতি পেসার। 
শামারের তোপে ২ উইকেটে ১১৩ থেকে ৬ উইকেটে ১৩৬ রানে পরিণত হয় অস্ট্রেলিয়া। এ অবস্থা থেকে অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন স্মিথ ও মিচেল স্টার্ক। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে  ৩০ বলে ৩৫ রান যোগ করে উইকেটে সেট হয়ে যান তারা। এ অবস্থায় আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উইকেট শিকারে মাতান শামার। ১৪ বলে ২১ রান করা স্টার্ককে শিকার করে ইনিংসে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন অভিষেক সিরিজ খেলতে নামা শামার। 
স্টার্কের পর অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে ২ রানে থামিয়ে দেন শামার। ১৭৫ রানে অষ্টম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। এমন অবস্থায় শেষ ২ উইকেটে ৪১ রান দরকার পড়ে অস্ট্রেলিয়ার। টেস্ট ক্যারিয়ারের ৪১তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের আশা ধরে রেখেছিলেন স্মিথ। 
নবম উইকেটে নাথান লিঁওকে ১৬ রানের জুটি গড়েন স্মিথ। এবার তাদের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান আরেক পেসার আলজারি জোসেফ। তিনি ৯ রান করা লিঁওকে আউট করলে  ১৯১ রানে নবম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। 
শেষ উইকেটে ২৫ রানের লক্ষ্যে এগারতম ব্যাটার জশ হ্যাজেলউডকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন স্মিথ। লিঁওর ফেরার পর ১টি করে চার-ছক্কায় ১৬ রান তুলেন স্মিথ। 
ইনিংসের ৫১ ও শামারের ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে হ্যাজেলউডের অফ-স্টাম্প উপড়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অবিস্মরনীয় জয় এনে দেন শামার। ২০৭ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ৯টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৪৬ বলে ৯১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেও অস্ট্রেলিয়ার হার এড়াতে পারেননি স্মিথ। ২০২১ সালের জানুয়ারির পর ঘরের মাঠে টেস্ট ম্যাচ হারের স্বাদ পেল অস্ট্রেলিয়া।
১১ দশমিক ৫ ওভার বল করে ৬৮ রানে ৭ উইকেট নেন শামার। এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্টে অভিষেক হয়েছিলো শামারের। প্রথম ইনিংসে ৯৪ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। 
এ ম্যাচে ১২৪ রানে ৮ উইকেট নিয়ে সেরা খেলোয়াড় হন শামার। সিরিজ সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। পুরো সিরিজে ১৩ উইকেট ও ৫৭ রান করেন শামার।