৫০,০০০ পিস ইয়াবাসহ তিনজন রোহিঙ্গা মাদক কারবারী র্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩, ০২:০০ দুপুর
ছবি সংগৃহীত
কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানাধীন জাদিমোড়া এলাকায় চেকপোষ্ট স্থাপন করে ৫০,০০০ পিস ইয়াবা উদ্ধারসহ তিনজন রোহিঙ্গা মাদক কারবারী র্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার
র্যাব-১৫ দায়িত্বাধীন এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে বদ্ধ পরিকর। কক্সবাজার একটি ইয়াবা পাচার প্রবণ এলাকা হওয়ার সুবাদে স্থানীয় মাদক কারবারীদের যোগসাজশে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিকরা ইয়াবা কারবারে সাথে জড়িত হয়ে পড়েছে। এই মাদক কারবারীরা ছদ্মবেশ ও নানাবিধ অভিনব পন্থা অবলম্বন করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদকদ্রব্য পাচার করছে। মাদকের এই ভয়াল থাবা থেকে যুব সমাজ ও দেশকে বাঁচাতে র্যাব-১৫ কর্তৃক দায়িত্বাধীন এলাকায় প্রতিনিয়তই মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিকদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে সার্বক্ষনিক মনিটরিং’সহ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১৫, আভিযানিক দলের গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারীর প্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, কতিপয় মাদক কারবারী বিপুল পরিমাণ মাদক নিয়ে টেকনাফ থেকে সিএনজি যোগে কক্সবাজারের দিকে আসছে। এমন নির্ভরযোগ্য তথ্যের প্রেক্ষিতে গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ অনুমান ১৬.০০ ঘটিকার সময় র্যাব-১৫, সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোড়া এলাকার জাদি পাহাড়ের প্রধান গেইটের সামনে টেকনাফ-কক্সবাজার মহাসড়কের উপর একটি অস্থায়ী চেকপোষ্ট স্থাপন করতঃ মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। র্যাবের আভিযানিক দল চেকপোষ্টে তল্লাশী অভিযানের একপর্যায়ে একটি সিএনজি তল্লাশীকালে সিএনজিতে যাত্রীবেশে থাকা ০৩ জন যাত্রীর গতিবিধি সন্দেজনক হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদেরকে রোহিঙ্গা নাগরিক বলে স্বীকার করে এবং তাদের হেফাজতে মাদকদ্রব্য ইয়াবা রয়েছে বলে জানায়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত ব্যক্তিদের দেহ ও সাথে থাকা পলিব্যাগ তল্লাশী করে তাদের হেফাজত হতে সর্বমোট ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার এবং ০২টি এন্ড্রয়েট মোবাইল, ০১টি বাটন ফোন, ০৫টি সীম কার্ড ও নগদ ৩,১০০/- (তিন হাজার একশত টাকা) জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত রোহিঙ্গা মাদক কারবারীদের বিস্তারিত পরিচয় :
(১) কামাল হোসেন (২৪) (রোহিঙ্গা), পিতা-মৃত মীর আহমদ, সাং-জাদিমোড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২৭, ব্লক-এ/৪, টেকনাফ, কক্সবাজার।
(২) আব্দু রাজ্জাক (৩৭) (রোহিঙ্গা), পিতা-রশিদ আহমেদ, সাং- জাদিমোড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২৭, ব্লক-এ/৫, টেকনাফ, কক্সবাজার।
(৩) কামাল হোসেন (২৮) (রোহিঙ্গা), পিতা-মৃত নজির হোসেন, সাং- জাদিমোড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২৭, ব্লক-এ/৫, টেকনাফ, কক্সবাজার।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা তাদের ইয়াবা কেনা-বেচা চক্রের আরও এক রোহিঙ্গাসহ তিনজন পলাতক মাদক কারবারীর নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃতরা মিয়ানমারের নাগরিক হওয়ায় নিজ দেশের বিভিন্ন এলাকা ও সেখানকার পরিস্থিতি ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করায় এখানকার পরিবেশ সম্পর্কে তারা ধারণা লাভ করে। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারী চক্রটি স্থানীয় মাদক কারবারীদের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা পাচার করে আসছিল বলে জানায়। পলাতক অজ্ঞাত মাদককারবারিদের পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা সংগ্রহসহ গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে । অদ্য অর্ধলক্ষ মাদকসহ র্যাবের আভিযানিক দল কর্তৃক উপরোল্লিখিত রোহিঙ্গা মাদক কারবারীগণ ধৃত হয়।
ধৃত মাদক ব্যবসায়ীগণকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে টেকনাফ মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।