নৌকার প্রার্থী শাহজাহান ওমরের সমাবেশে বন্দুক হাতে বিএনপি নেতা
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ০৪, ২০২৩, ০৭:৫৩ বিকাল
ছবি সংগৃহিত
ঝালকাঠি-১ (কাঁঠালিয়া-রাজাপুর) আসনে বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়া শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম) আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সমাবেশ করার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় সমাবেশে অস্ত্র হাতে এক বিএনপি নেতাকেও দেখা গেছে। তিনি শাহজাহান ওমরের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে কাঁঠালিয়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ সমাবেশ হয়।
সভায় উপস্থিত লোকজন জানান, সমাবেশে বন্দুকধারী ওই ব্যক্তির নাম আবদুল জলিল মিয়াজী। তিনি কাঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি। তারা আরও জানান, এম শাহজাহান ওমর বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় সমাবেশে কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজীর হাতে দুই নাল ওয়ালা একটি বন্দুক বহন করতে দেখে গেছে। সমাবেশে শাহজাহান ওমরের বাম পাশে কাঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজী ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন কবির হাওলাদার চেয়ারে বসা ছিলেন।
এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বন্দুকটি শাহজাহান ওমরের বলে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে কেউ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
অপরদিকে ডান পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন কাঁঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গোলাম কিবরিয়া সিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাসার বাদশা, শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন।
নির্বাচনি সভায় শাহজাহান ওমর বলেন, ‘কাঠালিয়া আওয়ামী লীগের কোনো গ্রুপিং থাকতে পারবে না। এখানে তরুণলীগ, কিবরিয়ালীগ, বুড়ালীগ ও বাচ্চা লীগ থাকতে পারবে না। এখানে থাকবে শুধু শেখ হাসিনা গ্রুপ’। তিনি আরও বলেন, ‘আমি এবং বিএনপির দলবলসহ আপনাদের মেহমান’ আমাদের বরণ করে নেবেন। আমরা শিক্ষিত লোক, আমাদেরকে সম্মান করলে আপনাদেরকেও সম্মান করবো’।
সমাবেশ শেষে তিনি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। আগামী ১১ ডিসেম্বরের পরে আবার দেখা হবে বলে জানান।
এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা ফুলের তোরা নিয়ে আসলেও শাহজাহান ওমরকে ফুল দেয়ার সুযোগ না দেওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল সালেহ বলেন, বৈধ অস্ত্র নিয়ে সমাবেশে যেতে পারবে না এমন কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে এ ঘটনায় সোমবার বিকালে আ.লীগের প্রার্থী শাহজাহান ওমরকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। কমিটির প্রধান ঝালকাঠি সিনিয়র সহকারী জজ পল্লবেশ কুমার কুন্ড স্বাক্ষরিত চিঠিতে ‘শাহজাহান ওমর অথবা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যাক্তিকে সশরিরে এসে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ্যে অস্ত্র বহন ও প্রতীক বরাদ্ধের আগেই নির্বাচনি প্রচার চালানোর ব্যখ্যা দিতে বলেছেন’।
আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে বসা কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজী বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রটি ব্যারিস্টার মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর বীর উত্তমের লাইসেন্সকৃত ছিল। তিনি থানার অনুমতি নিয়ে তিনি কাঁঠালিয়া আসছেন তখন কাঁঠালিয়া থানার ওসিও এখানে উপস্থিত ছিলেন। আমার কাছে অস্ত্রটি রাখতে বলায় আমি আমার হাতে রাখছি। তার সঙ্গে আরও একটি লাইসেন্সকৃত পিস্তলও ছিল।
এ বিষয়ে কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, আমিসহ ওই জনসমাবেশ কোনো পুলিশ উপস্থিত ছিল না। পুলিশ আইন শৃঙ্খলা ডিউটিতে ছিল। আইনগতভাবে তিনি অস্ত্র নিয়ে জনসমাবেশ করতে পারেন না।
এ ঘটনায় শাহজাহান ওমর অথবা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সশরীরে এসে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ্যে অস্ত্র বহন ও প্রতীক বরাদ্দের আগেই নির্বাচনি প্রচার চালানোর ব্যাখ্যা দিতে চিঠি দিয়েছেন নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি-১ আসনের আ.লীগের প্রার্থী ব্যারিস্টার এম শাহজাহান ওমর বলেন, কারণ দর্শানোর কোনো চিঠি আমি পাইনি। পেলে কী বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে দেখব।