ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিএনপির ‘দুর্বার গণআন্দোলন’ পূজার পরে: ফখরুল

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৩, ০৭:৪০ বিকাল  

ছবি সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম 'অবিচ্ছেদ্য' মন্তব্য করে এ দুই আন্দোলনকে এক করেই দুর্গাপূজার পরে ‘দুর্বার গণআন্দোলন’ গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার ঢাকায় নয়া পল্টনে দলের কার্যালয়ের সামনে তিন ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি চলাকালে তিনি এ ঘোষণা দেন। দুপুর ২টায় মির্জা ফখরুলকে ফলের রস পান করিয়ে অনশন ভাঙান এলডিপির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত অলি আহমেদ।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে তৈরি করা হয় অস্থায়ী মঞ্চ। সেখানে নেতারা অনশনে বসেন। এছাড়া সড়ক ও ফুটপাতে মাদুর পেতে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

আরও পড়ুনঃ তলে তলে কিছুই হয়নি: মির্জা ফখরুল

ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ অনশন কর্মসূচি পালিত হয়। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের ফলের রস খাওয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্ অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী ও অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ।ঢাকা ছাড়াও দেশের মহানগর ও জেলাগুলোতে তিন ঘণ্টার এ কর্মসূচি হয়েছে।

অনশন চলাকালে বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আর গণতন্ত্রের মুক্তি… দুইটা সমার্থক, অবিচ্ছেদ্য, একই। তাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে আন্দোলন করছি, একই সঙ্গে গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য যে আন্দোলন করছি এই দুইটিকে এক করে আমাদেরকে দুর্বার গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এই সামনের দিনগুলোতে।

"সবাই বলছেন, সামনে পূজা আছে। এই পূজার মধ্যে আমরা সবসময় বলছি যে, আমরা সর্বতোভাবে একটা শান্তিপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক ব্যবস্থায় বিশ্বাস করি। কারণ আমরা চাই না যে, কোনো আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে তারা এই সমস্যার সৃষ্টি করবে।”
বিএনপির ‘দুর্বার গণআন্দোলন’ পূজার পরে: ফখরুল 

শনিবার মহালয়া দিয়ে দুর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। আগামী ২৪ অক্টোবর দশমী দিয়ে শেষ হবে পূজার উৎসব।

গত শুক্রবার কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে ক্ষমতাসীন দল হামলা করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজকে এখানে সকল বক্তারা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, এখানে শুধু বিএনপি নয়, সব রাজনৈতিক দলের নেতারা এখানে ছিলেন, সবাই বক্তব্য দিয়েছেন, সংহতি প্রকাশ করেছেন। তারা শপথ নিয়েছেন যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় না করে কেউ বিশ্রাম করবেন না।”ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেও অভিযোগ তার।

তিনি বলেন, " তারা (আওয়ামী লীগ) ঘোষণা দেয় বিএনপি আমাদের শত্রু। অর্থাৎ তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, গণতন্ত্রের বিশ্বাস করলে কোনো রাজনৈতিক দলকে শত্রু বলতে পারে না।”‘তলে তলে কিছুই হয়নি, ওরা মিথ্যাচার করছে’

সরকারের কাছে মির্জা ফখরুলের প্রশ্ন, “তলে তলে সব কিছু ঠিক কথাটা বলার কারণ কি? তলের তলে না কি সব সাবার হয়ে গেছে। বারবার এই কথাটা কেন বলে? এজন্য বলে যে, আসলে কিছুই হয় নাই।  গণতান্ত্রিক বিশ্ব আজকে তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার জন্য পরিষ্কার করে বলছে এবং একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বলেছে।”ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকার হটিয়ে বিদেশে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও মনে করেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপির পাশাপাশি ঢাকায় ১২ দলীয় জোট ফকিরেরপুল পানির ট্যাংকের কাছে এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট বিজয় নগরে আলরাজী কমপ্লেক্সের কাছে ও গণফোরাম (মন্টু-পিপলস পার্টি) আরামবাগে দলীয় অফিসের সামনে তিন ঘণ্টার অনশন করে জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় গণঅনশনে দলের এলডিপির অলি আহমেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জনসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণঅধিকার পরিষদ(নূর) নুরুল হক নূর, গণঅধিকার পরিষদ (রেজা কিবরিয়া) ফারুক হাসান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার খন্দকার লুতফুর রহমান, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ,  জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপির আবু তাহের, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির শামসুল আলম, জমিয়তে উলামে ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খানসহ আরও অনেকে।

কর্মসূচিতে সাবেক বিচারপতি ইফতেদার আহেমেদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এএসএম আবদুল হালিম, সাবেক সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জহিরুল আলম, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল করিম খান, নির্বাচন কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এজেড এম জাহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের বিজন কান্তি সরকার, পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, কাদের গনি চৌধুরী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, অধ্যাপক এবিএস ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, অধ্যাপক এজেডএম পারভেজ, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, রাশেদুল হাসান হারুন, ফখরুল আলম, রফিকুল ইসলাম, রাশেদুল হক।

অনশনে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, শাহজাদা মিয়া, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, নূর মোহাম্মদ খান, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খানসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।