ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

‘গরিবের মাছ’ তেলাপিয়া-পাঙাশও চলে যাচ্ছে নাগালের বাইরে

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২৪, ০১:০৫ দুপুর  

ছবি সংগৃহীত

গরিবের মাছ খ্যাত পাঙাশ ও তেলাপিয়া এবং চাষের কইসহ সব ধরনের মাছের বাজারই ঊর্ধ্বমুখী। মধ্য ও নিম্নবিত্তরা আগে এসব মাছ কিনতে কিছুটা সাহস দেখালেও এখন দাম শুনেই মুখ লুকিয়ে বাজার ছাড়ছেন তাদের মধ্যে অনেকেই। এদিকে, বাড়তি দাম নিয়ে বিক্রেতারাও যেন অনেকটা অসহায়। তারা বলছেন, এই সময়ে মাছের দাম কম থাকার কথা থাকলেও সব ধরনের মাছের দামই তুলনামূলক বেশি।শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর বাড্ডা ও রামপুরা এলাকার বিভিন্ন মাছের বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য মতে, প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, পাঙাশ প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, ছোট সাইজের শোল প্রতি কেজি ৫০০ টাকা ও আর মাঝারি সাইজের শোল ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সরপুঁটি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়।

এছাড়া, বড় সাইজের আইড় মাছ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজিতে। প্রতি কেজি চিতল মাছ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, রুই মাছ ২৬০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা ও কার্প মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। আর চিংড়ি প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া, টাকি মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, মলা মাছ কেজি প্রতি ৪০০ টাকা ও পাবদা মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজার করতে আসা কামরুল ইসলাম ইসলাম নামের এক চাকরিজীবী বলেন, বাজারে এলে অতিরিক্ত দামের কারণে কোনো মাছই কেনা যায় না। গরিবের মাছ তেলাপিয়া, পাঙাশ, চাষের কইয়ের দামও চড়া। আর অন্য কোনো মাছ কেনার কথা ভাবাই যায় না। এখন পাঙাশ মাছও ২২০/২৪০ টাকা কেজিতে কিনতে হয়।

তিনি বলেন, বাজারে এলেই খুব মেজাজ খারাপ হয়। কিন্তু কাকে কী বলব? কিছুই বলার নেই। একটু দামাদামিরও সুযোগ থাকে না। বিক্রেতার এক কথা, নিলে নেন, না নিলে ভাগেন। আমরা আসলে যাব কোথায়?

মাসুদুর রহমান নামের এক গার্মেন্টস কর্মী বলেন, ইদানীং বাড়তি দামের কারণে বাজারে এলে মাছ কিনতে পারি না। বাজারে সবচেয়ে কম দামের মাছও এখন বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। দর-দাম করে সবশেষে তেলাপিয়া মাছ কিনলাম... তাও ২২০ টাকা কেজি দরে। আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষেরা কোনো মাছই এখন সেভাবে কিনতে পারছি না।

মাছের দাম প্রসঙ্গে মধ্যবাড্ডা মাছ বাজারের মাছ বিক্রেতা খলিল মিয়া বলেন, এই সপ্তাহে তুলনামূলক মাছের দাম অনেকটাই বেশি। এর কারণ আমরা বলতে পারব না, আড়ৎদাররাই ভালো বলতে পারবে। পুরো সপ্তাহেই মাছের দাম বেশি গেছে। শীতের মৌসুম হিসেবে এই সময়ে মাছের দাম কম থাকার কথা, কিন্তু উল্টো দাম অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি।

তিনি বলেন, আমরা কম দামে কিনতে পারি না, বেচব কীভাবে? পাবদা মাছ কেনা পড়েছে ৩৮০ টাকা করে, বিক্রি করছি ৪০০ টাকা করে। খরচ বাদ দিলে ২০ টাকাও লাভ থাকে না। আমাদেরও তো বিক্রি করতে হবে, ঢাকায় থাকি, স্ত্রী-সন্তান আছে, বাসা ভাড়া দিতে হয়, বাকি সব তো কিনেই খেতে হয়। আমরাও যে খুব বেশি ভালো আছি এ রকমটা নয়।