নৌকার মনোনয়ন পেলেন না ডা. মুরাদ ও মাহিয়া মাহি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২৩, ১১:৩১ দুপুর
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে এবার আওয়ামী লীগের মনোনায়নের থেকে বাদ পড়েছেন বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচিত-সমালোচিত ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। তার এই আসনে মনোনয়ন পেলেন দলের মাহবুবুর রহমান হেলাল। অপরদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি। এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নামের তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।
ডা. মুরাদ হাসানের বাবা মতিউর রহমান তালুকদার সাবেক সাংসদ এবং জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তিনি নিজে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ছাত্রজীবনে ছিলেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি।
জামালপুরের একটি আসন থেকে ২০০৮ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে দায়িত্ব পান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর।
প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমে বইমেলায় গাড়ি নিয়ে ঢুকে বিতর্কিত হন তিনি। এরপর মন্ত্রণালয় পরিবর্তন করা হয় তার। মন্ত্রণালয় পরিবর্তনের প্রধান কারণ ছিলো স্কয়ার হাসপাতালের সিকিউরিটির সঙ্গে ঝামেলা করার। তবে মন্ত্রণালয় পরিবর্তন করে যখন তাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয় এরপর থেকে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। একের পর এক বিতর্ক বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।
এর মধ্যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রথম বিতর্ক সৃষ্টি করেন তিনি। তখন সমাজের বড় একটা অংশ তার সমালোচনা করে। দেশব্যাপী শুরু হয় তুমূল আলোচনা-সমালোচনা। তবে ৭২ এর সংবিধানের পক্ষে বলায় একটা অংশের সমর্থনও পান ডা. মুরাদ হাসান। ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের পক্ষে, ৭২ এর সংবিধানের পক্ষে তার অবস্থানটিও শেষপর্যন্ত বিতর্কই তৈরি করে তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আর শব্দচয়নের কারণে। এক সময়ে তিনি ডা. জাফরউল্লা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিয়ে তিনি অশ্লীল অভিযোগ করে ধিকৃত হন নিজদলেও।
সবশেষ তিনি জড়ান অভিনেত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে অশালীন ভাষায় কথা বলে। চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে অশ্লীলতম ভাষায় আক্রমণ করেন। এমনকি নিজের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে হুমকি দিয়ে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তুলে আনার কথা বলেন। হুমকি দেন ধর্ষণেরও। হুমকির জন্য যে ভাষা তিনি প্রয়োগ করেছেন, তা শ্লীলতা, শালীনতার সব সীমা অতিক্রম করেছে।
এদিকে মুরাদ হাসানের এসব কর্মকাণ্ড ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে সরকারি দল। এ কারণে তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয় সরকার থেকে। এরপর থেকে দলের থেকে সরে থাকতে হয়েছে তাকে।