ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

চিয়া সিড নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৩, ০৬:১১ বিকাল  

ছবি সংগৃহীত

চিয়া সিড বর্তমান যুগের অন্যতম সুপার ফুড। বহুল আলোচিত এ খাবারটি এখন সবার ঘরে ঘরে। চিয়া সিডে রয়েছে কিছু বিশেষ উপকারিতা, তবে এটি গ্রহণ করার রয়েছে কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম এবং অল্পকিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। চিয়া সিডে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। 

মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমি অঞ্চলে সাধারণত চিয়া নামের এক ধরনের গাছ জন্মায়। পুদিনা পরিবারের এ ছোট গাছটির বীজ হচ্ছে চিয়া সিড। সাদা, কালো ও বাদামি রঙের হয়ে থাকে সাধারণত এ সিডগুলো, অনেকটা তীলের মতো, কিন্তু আকারে কিছু ভিন্নতা দেখা যায়। পানিতে ভেজানোর পর সাধারন্ত চিয়া সিড ফুলে প্রায় ১০ থেকে ১২ গুণ বড় হতে পারে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, আয়রন, পটাশিয়াম এবং প্রোটিন। এ ছাড়াও খুব গুরুত্বপূর্ণ ওমেগা-৩ রয়েছে চিয়া সিডে। ওমেগা-৩ এবং এন্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি আমাদের কার্ডিয়াক হেলথের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন রকমের এন্টি অক্সিডেন্ট যেমন কেমফেরল, ক্লোরোজেনিক এসিড, ক্যাফিক এসিড ইত্যাদি থাকার কারণে আমাদের চুল, ত্বক এবং চোখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ চিয়া সিড। সর্বোপরি চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার।

আরও পড়ুনঃ গরম ভাতের সঙ্গে বাঁধাকপির ভর্তা জেনে নিন মজার রেসিপি

আমরা জানি ফাইবার আমাদের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে, ওজন কমাতে সহায়তা করে, আমাদের গ্যাস্ট্রো এন্টেস্টিনাল যে কোনো সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে এ ফাইবার। ক্যালসিয়াম থাকার কারণে আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায়ও রয়েছে চিয়া সিডের বিশেষ ভূমিকা। চিয়া সিডের এন্টি অক্সিডেন্ট এবং ফাইবার আমাদের শরীরের টক্সিক পদার্থ শরীর থেকে বের করে আনতে সহায়তা করে। চিয়া সিড খাবার ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে এর পরিমাণের ক্ষেত্রে। চিয়া সিড সরাসরি পানিতে ভিজিয়েও খাওয়া যায়, আবার বিভিন্ন ধরনের খাবারের সঙ্গে যেমন দই, দুধ, জুস ইত্যাদির সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে, এমনকি অনেক খাবার রান্নায়ও একটি ঊপাদান হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে চিয়া সিড। 

তবে চিয়া সিড সরাসরি খেতে হলে পানিতে ন্যূনতম ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে খেলে এর কার্যকারিতা বেশি হয়। শুধু কার্যকারিতা নয় চিয়া যেহেতু বিজ জাতীয় খাদ্য এবং এর আকারও যথেষ্ট ছোট, সরাসরি চিয়া সিড খেলে এটি আমাদের গ্যাস্ট্রোএন্টেস্টিনাল ট্রাক্ট অর্থাৎ পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন জায়গায় কিছু অবস্ট্রাকশন তৈরি করতে পারে। চিয়া সিড খাওয়ার ক্ষেত্রে এর পরিমাণের দিকে আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে যারা চিয়া সিডের উপকারিতাকে উপভোগ করার জন্য বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকেন তাদের কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হওয়া। চিয়া সিডের পুষ্টিগুণের চিন্তা করে চিয়া সিড অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। কারণ প্রচুর ফাইবার থাকায় চিয়া সিড আমাদের ব্লটেড ভাব বা পেট ফাঁপা ভাব তৈরি করে। চিয়া সিড ব্লাড সুগার কন্ট্রোল করতে সহায়তা করে।

আরও পড়ুনঃ জুমার দিন যে ব্যক্তির আমল কবুল হয় না

তবে অতিরিক্ত খেলে বদ হজম, গ্যাস, এসিডিটি ইত্যাদি হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে এই অতিমাত্রায় ফাইবার খাওয়া এবং এর সঙ্গে পানির পরিমাণ না বাড়ানো হয় তাহলে গ্যাস, এসিডিটি ইত্যাদি হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে এই অতিমাত্রায় ফাইবার খাওয়ায় বমিভাব এমনকি ডায়রিয়াও হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে পেট ফোলাভাব তৈরি হয় এবং কারও কারও ক্ষেত্রে চিয়া সিডে অ্যালার্জি হতেও দেখা যায় এবং এ অ্যালার্জিতে জিহ্বা, ঠোঁট ফুলে যাওয়া বা চুলকানি হতে দেখা যায়। এ ছাড়াও যাদের কিডনি সমস্যা রয়েছে তাদের এ ধরনের ভেষজ খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে আপনার কিডনি কন্ডিশন অনুযায়ী দৈনিক ফাইবারের চাহিদার সঙ্গে ব্যালেন্স করে চিয়া সিড খাবার কথা চিন্তা করতে পারেন। আশা করি খুব সহজেই আপনাদের বুঝাতে পেরেছি এ সুপার ফুড চিয়া সিডের উপকারিতা এবং তা ব্যবহারে কিছু সচেতনতামূলক পদক্ষেপ।

২৪ ঘন্টা আপডেট নিউজ পেতে bdtribune24/বিডিট্রিবিউন২৪ এর ফেসবুক পেজ ফলো করুন

লেখক: চিফ ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান ও বিভাগীয় প্রধান, ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেড।