ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি যুদ্ধ
যে শর্তে ৭০ জিম্মিকে মুক্তি দেবে ফিলিস্তিন
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৩, ০৩:০৬ দুপুর
ইসরায়েলে জিম্মিদের তালিকাসংবলিত একটি দেয়াল। ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলের ৭০ জিম্মিকে মুক্তি দিতে চলেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। দলটি জানিয়েছে, শর্ত মানলে এসব জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হতে পারে। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হামাস সোমবার জানায়, তারা কাতারের মধ্যস্থতায় ৭০ জিম্মিকে মুক্তি দিতে চলেছে। এ জিম্মিদের মধ্যে নারী ও শিশুরা রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। গাজায় পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্ত মানলে এসব জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবায়দা বলেন, জিম্মিদের মুক্তির জন্য পুরো গাজা উপত্যকায় পাঁচদিনের যুদ্ধবিরতির শর্ত মানতে হবে। এছাড়া এ অঞ্চলের সব জায়গায় মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দিতে হবে। নিজেদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে একটি রেকর্ডেড অডিও শেয়ার করে এ তথ্য জানান তিনি।
এ সময় তিনি এ জিম্মি বিনিময় প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত ও এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেন।
এর আগে গত শনিবার (১১ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইউয়র্ক টাইমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে দুটি প্রস্তাবকে সামনে রেখে হামাসের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর একটি প্রস্তাবের আওতায় অল্পসংখ্যক বেসামরিক নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হবে। অন্য একটি প্রস্তাবের আওতায় ১০০ বা তার বেশিসংখ্যক বেসামরিক বন্দিকে মুক্তি দেবে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা। এই আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে এসব তথ্য জানায় নিউইয়র্ক টাইমস।
গত ৭ অক্টোবর গাজা সীমান্তবর্তী ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে সামরিক অভিযান চালায় হামাস। এ সময় প্রায় আড়াইশ’ ব্যক্তিকে বন্দি করে প্রতিরোধ যোদ্ধারা। যার মধ্যে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সদস্য ছাড়াও রয়েছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক। এসব বেসামরিক বন্দিদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের নাগরিকও রয়েছে বলে জানা যায়।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ১০-২০ জন বন্দিকে মুক্তি দিতে পারে প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এদের মধ্যে ইসরায়েলি নারী, শিশুসহ বিদেশি বন্দিরা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হলে এ প্রস্তাব বাস্তবায়ন করবে হামাসসহ অন্যান্য প্রতিরোধ যোদ্ধারা। পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হলে বাকি বেসামরিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানান, বেসামরিক বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ছাড়াও গাজায় আরও বেশি ত্রাণ সহায়তা, হাসাপাতলগুলোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি এবং ইসরায়েলি কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের মুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে কেনো প্রকার নিশ্চয়তা দিতে পারেনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীতে যোগদানে সক্ষম কোনো পুরুষকে বন্দিদশা থেকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হামাস।
জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র কাতারের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও জড়িত আছেন বলে জানায় মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি। মার্কিন কর্মকর্তারা গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে ইসরায়েলি হামলা বন্ধের পক্ষে মতামত দিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে।