ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

বিরোধীদের গ্রেপ্তার ও সহিংসতা নিয়ে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: নভেম্বর ০৭, ২০২৩, ১০:৫৪ দুপুর  

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন বেদান্ত প্যাটেল (ফাইল ছবি)

বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন বেদান্ত প্যাটেল এ তথ্য জানিয়েছেন।

স্থানীয় সময় সোমবার (৬ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এই ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও সহিংসতা প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, বাংলাদেশে সহিংসতার যেকোনও ঘটনাকে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্যাটেল। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ওই ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।

এদিনের সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক বেদান্ত প্যাটেলের কাছে সরকারবিরোধী আন্দোলন এবং বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে বিক্ষোভ চলছে। তারা ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছেন এবং সরকার এক অর্থে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে। আটক করা হয়েছে বিএনপি মহাসচিবসহ সব পদমর্যাদার নেতা-কর্মীসহ ৮ হাজারের বেশি লোককে। গত ২৮ অক্টোবর বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। বিরোধী দলের সদস্যদের আগুনে নিক্ষেপ করতে বা তাদের হাত পোড়াতে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা তার দলের সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনের জন্য শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সেই পরিবেশ তৈরির জন্য আপনি কি বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকবেন এবং নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবেন?

আরও পড়ুন: একদিন বিরতি দিয়ে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ বিএনপির 

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ – এবং আপনি আমাকে অনেকবারই এটা বলতে শুনেছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। একটি দলের বিপরীতে আমরা আলাদা করে কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। এই মুহূর্তে আমাদের মনোযোগ হচ্ছে – আগামী জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিবেশ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা। এছাড়া বাংলাদেশি জনগণের সুবিধার জন্য একসাথে কাজ করার আহ্বান জানাতে বাংলাদেশের সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলের নেতাদের সাথে, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথেও যথাযথভাবে সম্পৃক্ত থাকার কাজ অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের জনগণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। যুক্তরাষ্ট্র সি-৩ ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে এবং এখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কর্মীরা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের অজুহাতে ভাংচুর এবং সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে নির্বাচনের আগে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশকে ব্যাহত করছে। আপনি কি জাতীয়তাবাদী দলকে সহিংসতা বন্ধ করে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বলবেন?

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমরা এই জানুয়ারির নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিবেশ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং সহিংসতার যে কোনও ঘটনাকে আমরা অবিশ্বাস্যভাবে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে থাকি। আমরা সরকারের সাথে, বিরোধী দলগুলোর সাথে, সুশীল সমাজের সাথে এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে বাংলাদেশি জনগণের স্বার্থে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানাতে যুক্ত আছি এবং সেটি অব্যাহত রাখব।

আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাকারীর পরিচয় জানাল র‌্যাব 

পরে ওই সাংবাদিক বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে জাতীয়তাবাদী দলের নেতারা একজন মার্কিন নাগরিককে তাদের প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে এসে ক্যামেরার সামনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা বলে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং জানায়, বাইডেনের সাথে তার প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয়। আর তখনই– আরেক বিএনপি নেতা জাতীয়তাবাদী দলের উদ্ধারকারী হিসেবে পিটার হাসকে অবতার হিসেবে আখ্যায়িত করেন। আপনি কি স্পষ্টভাবে জাতীয়তাবাদী দলের এই দাবি অস্বীকার করবেন?

জবাবে প্যাটেল বলেন, আমি সেই রিপোর্ট দেখিনি। সত্যি বললে আপনি ঠিক কি সম্পর্কে কথা বলছেন তা নিয়ে আমার সত্যিই কোনও ধারণা নেই।

তিনি আরও বলেন, আমাকে কথা বলতে বাধা দেবেন না। ঢাকায় আমাদের দূতাবাসে যুক্তরাষ্ট্রের অবিশ্বাস্য প্রতিভাবান দল রয়েছে, যার নেতৃত্বে এমন একজন অভিজ্ঞ রাষ্ট্রদূত রয়েছেন যিনি শুধু বাংলাদেশেই নয়, বৃহত্তর অঞ্চলেও কাজ করতে পারদর্শী। এবং আমি যেমন বলেছি, আমরা জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিবেশ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।

২৪ ঘন্টা আপডেট নিউজ পেতে bdtribune24/বিডিট্রিবিউন২৪ এর ফেসবুক পেজ ফলো করুন