ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি যুদ্ধ
গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের অবসান দাবিতে বিশ্বজুড়ে মুসলিম বিক্ষোভ
প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৩, ১০:২২ দুপুর
ছবি: রয়টার্স
গাজায় প্রায় দুই সপ্তাহের ইসরায়েলি বিমান ও বোমা হামলা অবসানের দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা থেকে তিউনিসিয়ার তিউনিস পর্যন্ত শুক্রবার বিক্ষোভ করেছে মুসলিমরা।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামাস যোদ্ধারা হামলা চালানোর পর থেকে পাল্টা জবাবে গাজায় ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর চালানো অবিরাম হামলায় এখন পর্যন্ত সেখানে ৪ হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
হামাস যোদ্ধাদের নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে ইসরায়েল ঘন জনবসতিপূর্ণ ছোট্ট ভূখন্ড গাজায় স্থল অভিযান চালানোরও প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিছু পশ্চিমা দেশ ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযানকে সমর্থন দিচ্ছে। তবে বেশিরভাগ মুসলিম দেশই ইসরায়েলকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি করার আহ্বান জানিয়েছে।
গাজায় যে মানবিক সংকটময় পরিস্থিতি হয়েছে তাতে মুসলিমরা ক্ষুব্ধ এবং তারা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার দিনশেষে হঠাৎ করেই বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। গাজা কর্তৃপক্ষ একটি হাসপাতালে বোমা হামলায় শত শত মানুষের মৃত্যুর খবর জানানোর পরই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতালে বিমান হামলার জন্য হামাস ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। ওদিকে, ইসরায়েল এ হামলার জন্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর রকেট হামলাকে দায়ী করেছে।
আরও পড়ুনঃ ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে জর্ডানের রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভ করেছে ৬ হাজারের বেশি মানুষ। ওদিকে, জর্ডানের ইসরায়েলি দূতাবাসের কাছে হাজার হাজার মানুষ সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভকারীরা হামাসকে সমর্থন দিয়েছে। ইসরায়েলে রকেট এবং আত্মঘাতী হামলা চালানোর জন্য হামাসকে আহ্বান জানিয়েছে তারা।
গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলা অবসানের দাবিতে হাজার হাজার মানুষের বিশাল বিক্ষোভ হয়েছে তুরস্ক এবং মিশরেও। ইস্তাম্বুলের বিয়াজিত স্কয়ারে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে প্রায় ২ হাজার মানুষ। তারা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে এবং ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়েছে। কারও কারও হাতে ছিল, ‘গণহত্যা বন্ধ হোক,’ ‘সন্ত্রাসী ইসরায়েল’ লেখা প্ল্যাকার্ড।
মিশরের আল-আজহার মসজিদে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। ‘আরব আর্মি কোথায়?’ স্লোগান দিয়েছে তারা। কেন্দ্রীয় তাহরির স্কয়ারেও বিক্ষোভ হয়েছে। মরোক্কোয় ইসলামপন্থি এবং বামপন্থিরা শুক্রবার অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিসে ইসরায়েলের গাজা অভিযানের বিরুদ্ধে কয়েকশ মানুষ বিক্ষোভ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ করেছে কিছু মানুষ। তিউনিসের এক বিক্ষোভকারী বলেন, “ইসরায়েল এবং তাদেরকে সমর্থন দেওয়া আমেরিকাই আসল সন্ত্রাসবাদী।”
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া- দুই দেশেরই রাজধানীতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কাছে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছে। তারা ইসরায়েলের পতাকা পোড়ানোসহ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টে জো বাইডেনের ছবি পদদলিত করে।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালা লামপুরে এক বিক্ষোভকারী বলেন, “আমরা ইসরায়েলের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে আজ এখানে জড়ো হয়েছি।” ওদিকে, ভারতেও মুসলিমরা জয়পুর এবং মুম্বাইয়ে ছোটখাট বিক্ষোভ করেছে। তাদের হাতে ছিল ‘ফিলিস্তিন মুক্ত কর’ লেখা প্ল্যাকার্ড।
ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় আঞ্চলিক শত্রুদেশ ইরানে বিক্ষোভ হয়েছে এবং ওই অঞ্চলে ইরানের মিত্র গোষ্ঠীগুলোও বিক্ষোভ করেছে। ইরাকে তেহরান সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়ারা বাগদাদে তাদের হাজার হাজার সমর্থক নিয়ে বিক্ষোভ করেছে গ্রিন জোন অভিমুখী সেতুর কাছে, যে এলাকায় রয়েছে মার্কিন দূতাবাস।
২৪ ঘন্টা আপডেট নিউজ পেতে বিডিট্রিবিউন এর ফেসবুক পেজ ফলো করুন
ওদিকে, জর্ডানের সঙ্গে ইরাকের সীমান্তে গাজার সমর্থনে অবস্থান ধর্মঘট করেছে ইরান-সমর্থিত আধাসামরিক বাহিনীগুলোর শত শত সমর্থক। তারা বাসে করে এসে বিক্ষোভ করে। একজন বিক্ষোভকারী বলেন, “আমরা ফিলিস্তিনে আমাদের মানুষদের সমর্থন দেব।”
রয়টার্স