ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভোট দেখতে নভেম্বরে আসছে ইইউ কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল: ইসি

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৩, ০৯:৫১ রাত  

ছবি সংগৃহীত

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চার সদস্যের কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল আসছে নভেম্বরে।দলটি ভোটের আগে পরে মিলিয়ে তারা প্রায় দুই মাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

তিনি বলেন, “২১ নভেম্বর থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা থাকবে বাংলাদেশে।”ইইউ সদরদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি স্থানীয় দূতাবাসের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে এসেছে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তারা।

গত রোববার বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির বাসভবনে এক বৈঠকে অংশ নেয় ক্ষমতাসীন দলের আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ১০ টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।পরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, “তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) একটা ছোট আকারের এক্সপার্ট গ্রুপ নির্বাচনকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য পাঠাবে।”

আরও পড়ুনঃ একদিনে রেকর্ড দেড়শ’ সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

গত ২১ সেপ্টেম্বর ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, ‘বাজেট স্বল্পতার’ কথা বলে আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।পরে ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান নির্বাচন কাজী হাবিবুল আউয়াল ঢাকায় ইইউর রাষ্ট্রদূতকে চিঠির জবাব দেন এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানান। তিনি এতে লেখেন, কমিশন আশা করে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছোট পরিসরে হলেও একটি দল পাঠাবে।

বিরোধী জোটের আন্দোলনের মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে গত জুলাইয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল বাংলাদেশে আসে। দলটি নির্বাচন কমিশনসহ অংশীজনের সঙ্গে বৈঠকও করে।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণ রাজনৈতিক বিরোধ। বিরোধী দল বিএনপি ও তার মিত্ররা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে আছে। দাবি পূরণ না হলে তারা ভোটে না আসা এবং নির্বাচন হতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। আগামী ২৮ অক্টোবর থেকে জোরাল আন্দোলনে নামার ঘোষণাও আছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলছে, উচ্চ আদালতে রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে। এটা ফেরানোর সুযোগ নেই। ভোটে আসা বা না আসা কোনো দলের একান্ত নিজস্ব সিদ্ধান্ত।এমন পরস্পরবিরোধী অবস্থানের মধ্যে ২০১৪ সালে বিরোধীদের বর্জনের মুখে একতরফা নির্বাচন হয়েছিল। সে সময় ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ নানা পক্ষ অবশ্য সরকার ও বিরোধীপক্ষকে সংলাপে বসে সমঝোতার আহ্বান জানাচ্ছে। একজন নির্বাচন কমিশনারও জনগণ ও দেশের স্বার্থের কথা ভেবে দুই পক্ষের প্রতিই একই আহ্বান রেখেছেন।

নির্বাচন কমিশন বলছে, আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে ভোটের আয়োজন করতে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে তারা জানুয়ারির শুরুতেই ভোট নিতে চায়। এ জন্য নভেম্বরে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সংস্থাটি।এরই মধ্যে ভোটের সরঞ্জাম পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আঞ্চলিক নির্বাচনী অফিসে ব্যালট বাক্স পাঠানো শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে যাবে অন্যান্য সরঞ্জাম।নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান,বাজেট স্বল্পতার কথা বলে আগে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর কথা বললেও এবার নিজেদের অর্থেই তাদের চার সদস্যের টিম আসছে।

তিনি বলেন, “পর্যবেক্ষকদের তো নিজেদের খরচে আসতে হবে। কমিশনের পক্ষ থেকে শুধু ফোরাম অব দ্য ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বডিস অব সাউথ এশিয়া (ফেমবোসা) এর কিছু সদস্যকে ইনভাইট করা হয়; তাদের মধ্যে যারা আসেন তাদের ব্যয় বহন করা হয়। কিন্তু সরকারি খরচে পর্যবেক্ষকদের আনা হয় না।”