ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নাশকতা মামলায় মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার সাবেক ছাত্রদল সভাপতি গ্রেফতার

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৩, ০৬:৩৭ বিকাল  

ছবি সংগৃহীত

র‌্যাব-১১ এর অভিযানে গজারিয়া থানাধীন এলাকায় গাড়ি পোড়ানো, ককটেল বিস্ফোরণ ও নাশকতাকারীদের অর্থের অন্যতম যোগানদাতা এবং সরকার বিরোধী আন্দোলনের মূলহোতা- গজারিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক এবং উপজেলা ছাত্রদল এর সাবেক সভাপতি মাহাদি ইসলাম বাবু (৩৭) গ্রেফতার।
 
র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে র‌্যাব জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
 
সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক দলসমূহের বিভিন্ন কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ও স্বার্থান্বেষী মহল হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। গত ২৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ রাজধানীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতিকারী ও সন্ত্রাসীরা রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষের উপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালায়। তাদের হামলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী ও সাধারণ মানুষসহ বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। পরবর্তী সময়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ০২ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলসমূহের বিভিন্ন কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষী ও সুযোগসন্ধানী মহল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ, গণপরিবহণ ও ব্যক্তিগত পরিবহণে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন ধরণের নাশকতার ঘটনা ঘটায়। সিসিটিভি ফুটেজ, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিও ফুটেজ এবং সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি বিশ্লেষণপূর্বক সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করেছে র‌্যাব-১১।
 
গত ২৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন বাউশিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত শান্তিনগর (বক্তারকান্দি) সাকিনস্থ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামগামী লেনে গাড়ী ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ ও নাশকতার ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী এবং অর্থের যোগানদাতা হিসেবে ভূমিকা পালন করে গজারিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহŸায়ক এবং উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি “মাহাদি ইসলাম বাবু (৩৭)”। এ ঘটনায় গত ২৯ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানায় মোট ৪১ জন ব্যক্তিকে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযুক্ত করে একটি মামলা রুজু করা হয়। গ্রেফতারকৃত মাহাদি ইসলাম বাবু (৩৭) এ মামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত। মামলা রুজু হবার পর হতেই র‌্যাব-১১ এর গোয়েন্দা দল ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আটক করবার জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় উল্লেখিত ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণপূর্বক ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ ঢাকা নিউ মার্কেট থানাধীন হাতিরপুল এলাকার মোতালেব প্লাজার সামনে থেকে র‌্যাব-১১ এবং র‌্যাব-১ এর যৌথ আভিযানিক দল মাহাদি ইসলাম বাবু (৩৭), পিতা- আহাদ মাস্টার, সাং- পোড়াচক বাউশিয়া, থানা- গজারিয়া, জেলা- মুন্সীগঞ্জ’কে গ্রেফতার করে।
 
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলাম কর্তৃক আহŸানকৃত হরতালকে সফল করার লক্ষ্যে মাহাদি ইসলাম বাবু (৩৭) এর নেতৃত্বে যানবাহনসহ বিভিন্ন সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ধ্বংসাত্মক ও নাশকতামুলক কর্মকান্ড সংঘটনের পরিকল্পনা করা হয়। এই পরিকল্পনা সফল করার উদ্দেশ্যে মাহাদি ইসলাম বাবু (৩৭) এর নেতৃত্বে প্রত্যেকের হাতে লোহার রড, ককটেল, লাঠিসোটা, ইটপাটকেল ইত্যাদি সহকারে বেআইনী জনতাবদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন বাউশিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত শান্তিনগর (বক্তারকান্দি) সাকিনস্থ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে জন-সাধারণের চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাংচুরসহ ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে বিস্ফোরক দ্রব্য ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এছাড়াও সে এসকল ধ্বংসাত্মক ও নাশকতামুলক কর্মকান্ড সংঘটনের অর্থের যোগানদাতা বলে স্বীকার করেছে।
 
সহিংসতা ও নাশকতা প্রতিরোধ ও দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জসহ র‌্যাব-১১ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় একাধিক টহল দল মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে র‌্যাব ফোর্সেস এর রোবাস্ট টহল পরিচালিত হচ্ছে। অবরোধে নিরাপত্তা প্রদানে দূরপাল্লার মালবাহী এবং যাত্রীবাহী পরিবহণসমূহকে চাহিদার প্রেক্ষিতে র‌্যাবের এসকর্ট প্রদানের মাধ্যমে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
 
গ্রেফতারকৃত আসামীকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।