ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নড়াইলে সন্তান কে হত্যার দায়ে মা গ্রেফতার

এস এম শরিফুল ইসলাম,নড়াইল প্রতিনিধি:

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ০৭, ২০২৩, ০১:৪৭ দুপুর  

নড়াইলের সদর উপজেলার লস্করপুর গ্রামের চাঞ্চল্যকর ১মাস ২৭ দিন বয়সী শিশু আরাফ হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন এবং আসামী কে গ্রেফতার করা হয়। হত্যার বর্ণনা ও দায় স্বাীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন হত্যার শিকার শিশুটির মা মৌসুমী খানম (২৪)। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে নড়াইল জেলা পুলিশের মিডিয়া সেন্টার থেকে প্রেস রিলিস এ গ্রেফতারের বিষয়টি জানানো হয়।

          প্রেস রিলিস থেকে জানা যায়, গত ২৭ নভেম্বর নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের লস্করপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও মৌসুমী খানম দম্পতির ১ মাস ২৭ দিন বয়সের শিশু সন্তান আরাফ মোল্যার লাশ তাদের বসতবাড়ির উত্তর পাশে আলিম মোল্যার মেহগনি বাগানের মধ্যে ছোট পুকুরের পানিতে পাওয়া যায়। এ বিষয়ে গত ২৯ নভেম্বর মৃত শিশু সন্তানের পিতা  মিলন মোল্যা বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে  হত্যা মামলা দায়ের করেন।

            গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্তকারী অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) তারেক আল মেহেদী এর তত্ত্বাবধানে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ সাব্বিরুল আলম ডিবি পুলিশের একটি চৌকস টিম নিয়ে নিজ শিশুসন্তান হত্যার দায়ে মা মৌসুমী খানম (২৪) কে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। আসামি মৌসুমী খানম কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামি বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।

            মৌসুমী খানম তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে বলেন,আরাফ জন্মের পর থেকেই তার শ্বাসনালী ছোট হওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতো এবং দুধ খেতে গেলে বুকে দুধ বাঁধতো। মাঝে মাঝে বমিও করে দিতো। বাচ্চাটির অনেক ঠান্ডা জনিত সমস্যাও ছিল। যে কারণে তাকে সবসময় চিকিৎসার মধ্যে রাখা হতো। ঘটনার দিন শিশু আরাফ তার মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার সময় হঠাৎ তার মুখ হা হয়ে যায়, শিশুটি চোখ বড় বড় করে তাকায় এবং কিছুক্ষণ পর তার শরীর নীল হয়ে যায়। তখন আরাফের মা মৌসুমী ভেবে ছিল তার বুকে মনে হয় দুধ বাঁধছে। এরপর তিনি তার বাচ্চাকে সোজা করে ঝাকাঝাকি করতে থাকেন। তার মাথায় ফুঁ দেন। কিন্ত শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তখন তিনি শিশুটির পালস্ চেক করে দেখেন যে, শিশুটি মারা গেছে। শিশু আরাফের মা মৌসুমী খানম কি করবে বুঝে উঠতে পারেন না। তার স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের কি বলবে এই ভেবে ভয় পেয়ে যায়। তারপর তিনি তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এবং স্বামীর ভয়ে তার মৃত শিশু সন্তান কে রাতের আঁধারে সকলের অগচরে বাড়ির পাশে আলিম মোল্যার মেহগনি বাগানের মধ্যে পুকুরের ভিতর নিজ শিশু সন্তানকে ফেলে রেখে আসেন। এরপর বাড়িতে এসে সবাইকে বলেন যে, তার ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না এবং ঘটনাটি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য জীন-পরী শিশুটিকে নিয়ে গেছে বলে গল্প সাজায়।
       
           নড়াইল পুলিশ সুপার মোহাঃ মেহেদী হাসান বলেন, শিশু আরাফ হত্যা কান্ডে মা মৌসুমী খানম আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে ।