ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

হেলিকপ্টারে চড়ে কর্মচারীর বাড়িতে সৌদি মালিক

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৩, ০২:০৩ দুপুর  

ছবি সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের সাহেবের চর গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে খাইরুল ইসলাম (৪০), আব্দুল হামিদ (৩৫) ও সারোয়ার হোসেন সাহিদ (৩০) চাকরি করেন সৌদি আরবের দাম্মাম আল হাচা শহরের বাসিন্দা সামিম আহমেদ হলিবির প্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে খাইরুল ২০ বছর ধরে মাজরায় (বাগানে), হামিদ ৭ বছর মাজরায় ও সাহিদ ৭ বছর ধরে গাড়িচালকের কাজ করছেন সেখানে।

দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুবাদে কফিল (মালিক) সামিম আহমেদ হলিবির সঙ্গে একটা সখ্যতা গড়ে উঠে তাদের। অর্জন করেছেন মালিকের আস্থা ও ভালোবাসা। সন্তানের ন্যায় যত্ন করেন তাদের। তাই তো সেই সম্পর্কের টানে বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশে কর্মচারীদের বাড়িতে ছুটে এসেছেন সৌদি মালিক।

dhakapost

গতকাল সোমবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সৌদি আরবের একটি ফ্লাইটে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন সৌদি নাগরিক সামিম আহমেদ হলিবি ও তার ছেলে আব্দুল লিলা হলিবি। এ সময় সেখানে উপস্থিত খাইরুল ইসলাম।

এরপর আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১০টায় সেখান থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে হোসেনপুর উপজেলার পৌর এলাকার ঢেকিয়া খেলার মাঠে এসে নামেন। এ সময় সৌদি মালিক ও তার ছেলেকে দেখতে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। ফুলের মালা দিয়ে অভিনন্দন জানান গ্রামবাসী। পরে প্রাইভেটকারে চড়ে কর্মচারীদের পৌর এলাকার বাসায় যান তারা। তিন দিন থেকে ঘুরে ঘুরে দেখবেন বাংলাদেশের সৌন্দর্য।

বাংলাদেশে এসে কেমন লাগছে এমন প্রশ্নে সামিম আহমেদ হলিবি বলেন, খুবই ভালো লাগছে। বাংলাদেশে আসতে পেরে আমি অনেক খুশি। তারা (খাইরুল, হামিদ ও সাহিদ) শুধু আমার কর্মচারী না আমার সন্তানের মতো।

তিনি আরও বলেন, সততা ও বিনয়ের জন্য এবং আমার প্রতিষ্ঠানের সম্মান বজায় রাখার জন্য তাদের ওপর আমি অনেক বেশি নির্ভরশীল।

dhakapost

প্রবাসী কর্মচারী আব্দুল হামিদ বলেন, আমাদের বাড়িতে আমাদের কফিল (মালিক) এসেছে। আমরা অনেক আনন্দিত। উনারা (মালিক ও তার ছেলে) কয়েক দিন থেকে আমাদের গ্রাম-শহর ঘুরে দেখবেন। আমাদের দেশীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতি সম্পর্কে জানবে। আমার মালিক খুবই ভালো মানুষ। আমাদের অনেক সহযোগিতা করেন।

দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া জিনাত বলে, এখানে একটা হেলিকপ্টার আসছে। বিদেশ থেকে মালিক আসবে। আমরা দেখতে আসছি। আমাদের অনেক ভালো লাগছে।

সাগর মিয়া নামের এক শিক্ষক বলেন, কর্মচারীর বাড়িতে সৌদি আরব থেকে প্রবাসী মালিক এসেছেন। এটা একটি বড় অর্জন। কর্মচারী এবং মালিকের মধ্যে যে সম্পর্কটা সত্যি একটি উদাহরণ।

হাজী আমির উদ্দিন বলেন, আমি ২৩ বছর সৌদি আরব এই মালিকের (সামিম আহমেদ হলিবি) অধীনে কর্মরত ছিলাম। আমার মালিক এসেছে শুনে রিসিভ করতে আমরা এসেছি। এই ছেলেগুলো (খাইরুল, হামিদ ও সাহিদ) এতিম ছিল, আমার আত্মীয়। আমি তাদেরকে সৌদি আরব নিয়েছিলাম। তারা এখন প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহ তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।