ঢাকা, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৪ কার্তিক ১৪৩১

শ্রীমঙ্গলে শুরু হলো শ্রী শ্রী মঙলচন্ডী পুজার মাধ্যমে দূর্গোৎসবের আহ্বান

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

 প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৩, ০৭:৫৪ বিকাল  

আগামী ২০ অক্টোবর থেকে সনাতন বাঙ্গালী ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পূজা। দূর্গা পূজা তিথি অনুযায়ী ২০ তারিখে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মৌলভীবাজাররের শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও ইউনিয়নের ইছামতি চা বাগানের মঙ্গলচন্ডির থলীতে ১৫ অক্টোবর থেকেই শুরু হয়েছে আগাম দুর্গাপূজা। 

এই মুহুর্তে দেশের অনান্য মন্ডপগুলোতে যখন চলছে প্রতিমা তৈরীর কাজ সাজসজ্জায় ধম ফেলার সময় নেই ঠিক সেই সময় শ্রীমঙ্গলের শ্রী শ্রী মঙ্গলচন্ডী থলির পূজা মন্ডপ ঢাকের বাদ্যে ও উল্লুধ্বণিতে মুখরিত। বৈদিক রীতি অনুযায়ী দেবী দূর্গার ৯টি রূপের পৃথক পৃথক প্রতিমা তৈরী করে এখানে ৯ দিনব্যাপী পূজা করা হচ্ছে। 

পূজার প্রধান পুরহিত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দীপংকর ভট্টাচার্য্য জানান, রোববার করা হয় দেবীর শৈলপুত্রী রূপে পূজো শুরু করে। আজ সোমবার হলো ব্রম্মচারিণী রূপে এর পর একেক দিন চন্দ্রঘন্টা, কুষ্মান্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রী, মহাগৌরী, সিদ্ধিদাত্রী রূপে ৯ দিনব্যাপী পূজার্চনা। দশমী দিন হবে বিসর্জন। 

আরও পড়ুনঃ বগুড়ায় সরকারের উপকার ভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সম্প্রীতি সমাবেশ

নবদুর্গা পূজা কমিটির সভাপতি পরিমল ভৌমিক জানান, বিগত ১৩ বছর পাড়ি দিয়ে ১৪ বছরে পা রাখলো শ্রীমঙ্গলের প্রাচীন দেবস্থলী শ্রী শ্রী মঙ্গল চন্ডীর থলিতে তারা এ আয়োজন করে আসছেন। 
শ্রী শ্রী মঙলচন্ডী মন্দিরের স্থায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জিত দেব বলেন, আমাদের এ মন্দিরটি বিশাল চা বাগান পাড়ি দিয়ে আসতে হয়। আসতে রাস্তা ঘাটের অবস্থায় আমরা লজ্জিত। বিভিন্ন ভাবে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধন্যা দিয়ে ও কাজ করানো সম্ভব হয়নি। আমাদের দাবি রাস্তার এ বেহাল দশার সংস্কারের মাধ্যমে ভোগান্তি লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর দিবেন।

তিনি জানান, তাদের মন্ডপে প্রতিদিন মানুষের মধ্যে সৃষ্ট আসুরিক শক্তি দূর হওয়ার পাশাপাশি বিশ^ শান্তি কামনায় দেবী দূর্গার কাছে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। 

এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, শ্রীমঙ্গলের প্রত্যেকটি পূজামন্ডপে একজন করে এসআই, সাদা পোষাকে পুলিশ ও আনসার সদস্য সংযোক্ত করে দেয়া হয়েছে। 

এদিকে দেশের একমাত্র এই মন্ডপেই দেবী দূর্গাও ৯টি রূপে আরম্বওভাবে পূজা করায় এখানে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষের ভীড় হয়।

দেবীদূর্গা যেন জগতের অশুভ শক্তি দুর করে ভক্তের মনোবাঞ্চা পূর্ণ করেন এমটাই প্রার্থনা পূর্ণার্থীদের। রবিবার হবিগঞ্জ থেকে এই পূজা দেখতে আসা ভক্ত রীনা রানী দেব জানান, এই মন্ডপটি খুবই জাগ্রত। এটি প্রায় ৫শত বছরের পুরাতন দেবস্থলী। এখানে একমনে মা দূর্গার কাছে কিছু চাইলে ফল পাওয়া যায়। 

এদিকে এই বিশেষ পূজাকে সামনে রেখে পূজা প্রাঙ্গণে বসেছে মেলা।

এই পূজা মন্ডপের অপর পুরহিত দয়াময় ভট্টাচার্য্য জানান, মানুষের মধ্যে সৃষ্ট আসুরিক শক্তি দূর হওয়ার পাশাপাশি বিশ^ শান্তি কামনায় দেবী দূর্গার কাছে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। তিনি জানান, মা দূর্গার নব রূপের প্রথম রুপ হলো শৈলপুত্রী পর্বত রাজ হিমালয়ের গৃহে জন্ম হয় বলে তাঁর নাম হয় শৈলপুত্রী। বৃষভের পৃষ্ঠে তিনি আরোহিত। শৈলপুত্রী দেবীর দক্ষিণহস্তে ত্রিশূল এবং বাম হস্তে কমলপুষ্প। তিনি পূর্বজন্মে ব্রহ্মার পুত্র দক্ষ প্রজাপতির কন্যা ছিলেন। তখন তার নাম ছিল সতী। 

শৈলপুত্রী দুর্গার মহত্ব ও শক্তি অনন্ত। নবরাত্রি পূজার প্রথম দিনেই দেবীর পূজা ও আরাধনা করা হয়। উপনিষদ অনুসারে ইনি হৈমবতী রূপে দেবতাদের গর্ব চ‚র্ণ করেছিলেন