হত্যা পর পা বিচ্ছিন্ন করে উধাও,অবশেষে র্যাবের হাতে গ্রেফতার
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৩, ১১:১৩ রাত
ছবি সংগৃহীত
কক্সবাজারের পেকুয়ায় আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর আবু ছৈয়দ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ২নং আসামী ও অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী নেজামুল ইসলাম মোজাহিদ’সহ ০৩ জন আসামী র্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার
‘‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’’ এই স্লোগান নিয়ে র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, জঙ্গী দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, জলদস্যু, ডাকাত, চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ও মাদকসহ দেশে বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ নির্মূলে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে। র্যাব-১৫, কক্সবাজার দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় এ সকল অপরাধ দমনে প্রতিনিয়ত অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন এবং অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনাসহ আন্তরিকতার সহিত নিরলসভাবে কাজ করে আসছে।
গত ১০ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ রোজ মঙ্গলবার বিকেল অনুমান ১৫.০০ ঘটিকার দিকে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলাধীন মগনামা ইউনিয়নের আফজলিয়াপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে আবু ছৈয়দ’কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যাসহ তার একটি পা কেটে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এছাড়াও এ ঘটনায় আবু ছৈয়দের স্ত্রীসহ চারজন গুরুতর আহত হন। বর্বর এ হত্যাকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ স্থানীয় ও জাতীয় পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। একই সাথে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতার ও হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুনঃ নড়াইলে ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার
পরবর্তীতে গত ১১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে নিহতের ছেলে ছৈয়দ মোহাম্মদ ইমন বাদী হয়ে এজাহানামীয় ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে পেকুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি সর্ম্পকে অবগত হওয়া মাত্রই র্যাব-১৫, কক্সবাজার ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায়, গত ১৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ মধ্যরাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫, কক্সবাজারের একটি চৌকস আভিযানিক দল পেকুয়া উপজেলাধীন মগনামা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার এজাহারনামীয় ২নং আসামী ও অন্যতম প্রধান পরিকল্পনাকারী নেজামুল ইসলাম মোজাহিদ’সহ ০৩ জন’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিস্তারিত পরিচয়ঃ
(১) নেজামুল ইসলাম মুজাহিদ (২৮), পিতা-নুরুল ইসলাম, সাং-আফজলিয়াপাড়া, ৩নং ওয়ার্ড, মগনামা ইউনিয়ন, থানা-পেকুয়া, জেলা-কক্সবাজার।
(২) আমিরুজ্জামান (২৮), পিতা-মৃত নুরুন্নবী, সাং-আফজলিয়াপাড়া, ৩নং ওয়ার্ড, মগনামা ইউনিয়ন, থানা-পেকুয়া, জেলা-কক্সবাজার।
(৩) জামিল ইব্রাহিম ছোটন (২৫), পিতা-মৃত নুরুন্নবী, সাং-আফজলিয়াপাড়া, ৩নং ওয়ার্ড, মগনামা ইউনিয়ন, থানা-পেকুয়া, জেলা-কক্সবাজার।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করেন এবং ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা প্রদান করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের নিকট হতে আরো জানা যায় যে, ঘটনার ৩ দিন আগে হত্যাকারীরা নিজেদের মধ্যে গোপন সভা করে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। সে মোতাবেক গত ১০ অক্টোবর বিকেল ৩ ঘটিকায় নিহত আবু ছৈয়দ তার শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছেন, এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সেখানে হানা দেন। একপর্যায়ে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আবু ছৈয়দ’কে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। প্রাণ বাঁচাতে আবু ছৈয়দ খাটের নিচে ঢুকে পড়লে সেখান থেকে তাকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে হাত-পা চেপে ধরে কোপানোর পর মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যান। এ সময় আবু ছৈয়দের ডান পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যান তারা। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেয়ার সময় পথিমধ্যে মারা যান আবু ছৈয়দ।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও পলাতক অন্যান্য আসামিদেরকে আইনের আওতায় আনতে র্যাবের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।