ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

র‌্যাব-১১ এর বিশেষ অভিযানে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন দেবপুর এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ০৫ দুর্র্ধষ ডাকাত গ্রেফতার এবং বুড়িচং থানার ক্লু-লেস সনজিত চন্দ্র দেবনাথ হত্যার রহস্য উদঘাটন

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ০৯, ২০২৩, ১২:০৯ দুপুর  

ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে ‌র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র, মাদক উদ্ধার, চাঞ্চল্যকর হত্যা এবং বিভিন্ন আলোচিত অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধীদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতারের মাধ্যমে র‌্যাব ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
 
গত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন শাহদৌলতপুর গ্রামের অটোরিক্সাচালক সনজিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) অটোরিক্সা নিয়ে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে নিজ বাড়ী হতে বের হন। পরবর্তীতে অন্যান্য দিনের ন্যায় রাতের বেলায় তিনি বাড়িতে ফিরে না আসলে তার ছেলে অর্পন দেবনাথ গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ বুড়িচং থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী দায়ের করেন, যার সাধারণ ডায়েরী নং-১২১৬, তারিখ-২৬/০৯/২০২৩ইং। পরবর্তীতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং তারিখ আনুমানিক ১২:৩০ ঘটিকায় বুড়িচং থানাধীন রামপুর এলাকার কুমিল্লা সিলেট মহাসড়কের পাশে নিখোঁজ ভিকটিম সনজিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) এর মৃতদেহ পানিতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে অর্পন দেবনাথ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-৩৭, তারিখ-২৯/০৯/২০২৩, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দন্ডবিধি।
 
এই ঘটনার পরপরই এই নৃশংস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও হত্যার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ‌র‌্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার একটি আভিযানিক দল ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এই হত্যার সাথে জড়িত আসামীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১১ এর আভিযানিক দলটি গত ০১ অক্টোবর ২০২৩ইং তারিখ রাত আনুমানিক ২০:৪৫ ঘটিকায় কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন দেবপুর এলাকা হতে অটোরিক্সা চালক সনজিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামী ১। মোঃ নুর ইসলাম (২৫), পিতা-মোঃ হারুনুর রশিদ, সাং-বড়ইয়াকুড়ি, থানা-মুরাদনগর, জেলা-কুমিল্লা; ২। মোঃ মিজান (২৪), পিতা-মৃত মেজাম, সাং-বারেরা, থানা-দেবিদ্বার, জেলা-কুমিল্লা; ৩। শিপন মিয়া (২৩), পিতা-মৃত ইসমাইল মিয়া, সাং-বড়ইয়াকুড়ি, থানা-মুরাদনগর, জেলা-কুমিল্লা; ৪। মোঃ মিজানুর রহমান (৩৫), পিতা-আলী আহম্মেদ, সাং-পনশাহী, থানা-কচুয়া, জেলা-চাঁদপুর এবং ৫। মোঃ মোখলেছ (৩৭), পিতা-আব্দুর রব, সাং-গোহাট, থানা-কচুয়া, জেলা-চাঁদপুর’দেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসময় তাদের নিকট হতে ০১ টি ছোরা, ০১ টি চাকু, ০১ টি ক্রিজ, ০১ টি স্টীলের পাইপ ও ০১ টি পাইপ গিয়ার উদ্ধার করা হয়।
May be an image of flute and text
 
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা একটি সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্র। প্রায়শই তারা ডাকাতির লক্ষ্যে একত্রিত হয় এবং সুযোগ বুঝে ডাকাতি করে থাকে। গত ০১ অক্টোবর ২০২৩ইং তারিখ রাতেও তারা দেশীয় ধারালো অস্ত্র-সস্ত্রসহ ডাকাতির উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছিল। এছাড়াও সনজিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) হত্যার বিষয়ে তারা জানায় যে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং তারিখে গ্রেফতারকৃত আসামীরা একটি অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ঐ দিন রাত আনুমানিক ২০:০০ ঘটিকায় ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে কংসনগর যাওয়ার কথা বলে ভিকটিম সনজিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) এর অটোরিক্সাটি ভাড়া করে। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে একই দিন রাত আনুমানিক ২২:০০ ঘটিকায় পরস্পর যোগসাজশে ভিকটিম সনজিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) কে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের মৃতদেহ পানিতে ফেলে ভিকটিমের অটোরিক্সাটি নিয়ে পালিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা এই হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকালে গ্রেফতারকৃত আসামী নুর ইসলাম এর নিকট হতে নিহত অটোরিক্সাচালক সনজিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয় এবং পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানাধীন বেলতলা বাজারে অবস্থিত গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ মিজানুর রহমান (৩৫) এর অটোরিক্সা গ্যারেজ হতে ভিকটিমের অটোরিক্সাটি উদ্ধার করা হয়।
 
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।