ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

কাকরাইলে সংঘর্ষে আক্রান্ত গণমাধ্যমকর্মীরাও

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৩, ০৮:২১ রাত  

ছবি সংগৃহীত

বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে ঢাকার কাকরাইল মোড়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন ডজন খানেক সংবাদকর্মী।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন দৈনিক কালবেলার প্রতিবেদক রাফসান জনি, বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক সালমান তারেক শাকিল, ফটোগ্রাফার সাজ্জাদ হোসেন, প্রতিবেদক জুবায়ের আহমেদ, ব্রেকিংনিউজ ডটকমের ক্রাইম রিপোর্টার কাজী ইহসান বিন দিদার, নিজস্ব প্রতিবেদক আহসান হাবিব সবুজ, ঢাকা টাইমসের প্রতিবেদক সালেকিন তারিন, দৈনিক ইত্তেফাকের শেখ নাসির, ইনকিলাবের ফটোসাংবাদিক এফ এ মাসুম, গ্রিন টিভির বিশেষ প্রতিনিধি সাইফুল রুদ্র, ক্যামেরা পার্সন আরজুসহ আরও কয়েকজন রয়েছেন।

এছাড়া একুশে টেলিভিশনের গাড়িতে হামলায় প্রতিবেদক তৌহিদুর রহমান ও ক্যামেরা পারসন আরিফুর রহমান আহত হন। নাইটিংগেল মোড়ে ভাঙচুর করা হয় যমুনা টেলিভিশনের একটি গাড়ি। ভোরের কাগজের ফটো সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ আনিসকে মারধর করে ক্যামেরা নিয়ে যায় বিএনপি কর্মীরা।

আরও পড়ুনঃ পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রদল নেতা, ফুটেজ আছেঃ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সরকার হটানোর আন্দোলনে থাকা বিএনপি শনিবার নয়া পল্টনে মহাসমাবেশ শুরু করার পর কাছেই কাকরাইল মোড়ে দলটির কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। সেই সংঘর্ষ পরে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেলে রোববার সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি।

সংঘর্ষে আহত রাফসানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও সালেকিন তারিনকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) নেওয়া হয় চিকিৎসার জন্য।

রাফসানের সঙ্গে থাকা কালবেলার জ্যৈষ্ঠ প্রতিবেদক রাজন ভট্টাচার্য জানান, নাইটিংগেল মোড়ে সংঘর্ষ চলাকালে রাফসান সেখানে ভিডিও ধারণ করছিলেন। বিএনপির সমাবেশে আসা একদল লোক তার উপর হামলে পড়ে।

“তাকে লাঠি ও গাছের ডাল দিয়ে পেটানো হয়। বাঁচার জন্য দৌঁড় দিলে তাকে ধাওয়া করে পেটানো হয়। হামলাকারীরা রাফসানের মোবাইল ফোন ও আইডিকার্ড ছিনিয়ে নিয়েছে।”

গ্রিন টিভির অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর এমএম সেকান্দর বলেন, তাদের বিশেষ প্রতিনিধি সাইফুল রুদ্র, ক্যামেরা পার্সন আরজু বিজয় নগর থেকে কাকরাইলের দিকে যাওয়ার সময় বিএনপি কর্মীরা হামলা করে। তারা দৌড়ে গাড়িতে ওঠার আগেই তাদের লাঠিপেটা করা হয়। 

বাংলা ট্রিবিউনের চিফ রিপোর্টার সঞ্চিতা সীতু জানান, কাকরাইলে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তাদের সহকর্মী সালমান তারেক শাকিল, সাজ্জাদ হোসেন ও জুবায়ের আহমেদ আহত হন। এর মধ্যে শাকিলের পায়ে ব্যান্ডেজ করতে হয়েছে।

ঢাকা টাইমসের প্রতিবেদক আশিক হোসেন জানান, দুপুরে প্রধান বিচারপতির বাস ভবনের সামনে সংঘর্ষ দেখে মোটরসাইকেল দাঁড় করিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন তার সহকর্মী সালেকিন। এসময় পেছন থেকে আরেকটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। তাতে তার পায়ে আঘাত লাগে।

আরও পড়ুনঃ বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ সদস্য নিহত

রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশের তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে বিএনপি কর্মীদের হামলায় গণমাধ্যমকর্মীরা আহত হওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে।

বিএফইউজের একাংশের সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বিএনপির ডাকা সমাবেশে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ চালাতে গেলে সেই দৃশ্য ধারণ করেন সাংবাদিকরা। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বিএনপি ও জামায়াত কর্মীরা। তারা হামলে পড়েন সাংবাদিকদের ওপর।

“রাজারবাগ এলাকায় একুশে টেলিভিশনের গাড়িতে হামলা চালিয়ে জামায়াত- বিএনপির কর্মী ক্যামেরা ভাংচুর করে । এ সময় আহত হন একুশে টিভির সাংবাদিক তৌহিদুর রহমান ও ক্যামেরা পারসন আরিফুর রহমান। নাইটিংগেল মোড়ে ভাঙচুর করা হয় যমুনা টেলিভিশনের একটি গাড়ি।”

বিএফইউজে জানিয়েছে, আরামবাগ মোড়ে নটরডেম কলেজের সামনে বিএনপির কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন ভোরের কাগজের ফটো সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ আনিস। তিনি জানিয়েছেন, তাকে মারধর করে ক্যামেরা নিয়ে গেছে যুবদল কর্মীরা। নয়াপল্টন সংলগ্ন নাইটিঙ্গেল মোড়ে বিএনপি কর্মীদের হাতে আহত হয়েছেন সময় টিভির সাংবাদিক মারুফ।

“হামলায় মারাত্মক আহত হয়েছেন দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক রাফসানজানি। প্রাণ বাঁচাতে তিনি সেগুনবাগিচার দিকে দৌড় দিলে হামলাকারীরা তার পিছু নিয়ে ব্যাপক মারধর করে। এক পর্যায়ে রাফসান রাস্তায় পড়ে যান। এসময় তার মাথা ও সারা শরীরে বেদমভাবে আঘাত করা হয়। পরে অন্য সাংবাদিকরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান।

২৪ ঘন্টা আপডেট নিউজ পেতে bdtribune24/বিডিট্রিবিউন২৪ এর ফেসবুক পেজ ফলো করুন

বিএফইউজে নেতৃবৃন্দ বলছেন, “সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীরা যাতে কোনো ছাড় না পায়, সেজন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”