আরেকটি সাফ শিরোপায় চোখ বাংলাদেশের
প্রকাশিত: জানুয়ারী ২৯, ২০২৪, ০৮:০০ রাত
ছবি সংগৃহীত
নতুন বছরে বাংলাদেশের ফুটবলে প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট সাফ অ-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশীপ। ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এই টুর্নামেন্ট উপলক্ষ্যে আজ বাফুফে ভবনে বাংলাদেশ দলের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রেসমিটে অধিনায়ক ও কোচ উভয়ই শিরোপা ধরে রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। গত বছর ঢাকাতেই অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। স্বাগতিক বাংলাদেশ-এবারও একই ফলাফলের প্রত্যাশায়।
জাতীয় নারী ফুটবল দল নিয়ে গত কয়েক মাস কাজ করছেন সাইফুল বারী টিটু। সিনিয়র দলের পাশাপাশি জুনিয়র দলেও কাজ করা টিটু আশাবাদী, ‘আমাদের দল অনুশীলনের মধ্যে রয়েছে। সপ্তাহে একটি নিজেদের মধ্যে ম্যাচ হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে আমরা শিরোপা ধারা অব্যাহত রাখতে আশাবাদী।’
কোচ শিরোপা বজায় রাখতে আশাবাদী হলেও নারী অনূর্ধ্ব পর্যায়ের ফুটবলে টানা শিরোপা জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। বিগত সময়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হয়ে অংশগ্রহণ করে শিরোপা ছাড়াই ফিরতে হয়েছে। এমন রেকর্ড নিয়ে অবশ্য বিচলিত নন জাতীয় নারী দলের কোচ। দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার ফাইনালে খেলতে প্রথম ম্যাচটিকে টার্গেট করছেন, ‘টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচে জিতে আমরা ফাইনালের পথে থাকতে চাই।’
২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কমলাপুর স্টেডিয়ামে নেপালের মুখোমুখি হবে সন্ধ্যা সাতটায়। অধিনায়ক দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন, ‘সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন এবং সমর্থন দেবেন। যাতে আমরা আপনাদেরকে খুশি করতে পারি।’
টুর্নামেন্টে মাত্র চার দল অংশগ্রহণ করছে। প্রতি দল তিনটি করে ম্যাচ খেলবে। তিন ম্যাচের পর শীর্ষ দুই দল ফাইনালে খেলবে। মাত্র চার দল অংশগ্রহণ করলেও টুর্নামেন্টটি বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করেছেন কোচ টিটু,‘নেপাল ও ভারত এখানে অংশগ্রহণ করছে ফলে অবশ্যই এটা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। মাত্র তিনটি ম্যাচ হওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাত্রা আরো বেশি।’
প্রতিপক্ষ দলের খেলার ফুটেজ পায়নি বাংলাদেশ। তবে কোচ জেনেছেন ভারত দলের কোচিং স্টাফ সবাই নারী। অনূর্ধ্ব ১৯ দলে খেলোয়াড় সংকটের জন্য বাফুফে বিকেএসপিতে কয়েকদিন আগে একটি ট্রায়াল দিয়েছিল। সেই ট্রায়াল থেকে তিনজনকে এই দলে জায়গা পেয়েছেন। নতুন তিন জনের সঙ্গে সিনিয়র জাতীয় দলের স্কোয়াডে রয়েছেন এমন সংখ্যা পাচটি। নতুন-পুরনো মিলিয়ে দলটি বেশ ভারসাম্যপূর্ণই কোচ টিটুর কাছে,‘সিনিয়র দলের মতো এরাও প্রায় সবাই এক সঙ্গে রয়েছে অনেক দিন। দলের মধ্যে বোঝাপড়াও ভালো।’
সানজিদা-কৃষ্ণারা অনূর্ধ্ব পর্যায় থেকেই সিনিয়র দলে মাঠ মাতিয়েছেন। এই অ-১৯ দলে সেই সংখ্যাটা কম। সিনিয়র দলের সঙ্গে বর্তমান এই প্রজন্মের পার্থক্য করলেন কোচ টিটু এভাবে,‘তারা ম্যাচ খেলে অভিজ্ঞতা অর্জন করে পরিপক্বতা অর্জন করেছে। এভাবে কোয়ালিটি ডেভেলপ করেছে। প্রজন্মের সঙ্গে প্রজন্মের (মূলত ব্যাচ) ট্যালেন্টের একটা তারতম্য থাকে। এটা খেলোয়াড় টু খেলোয়াড়ও ভেরি করে।’
নারী ফুটবল দলের সংবাদ সম্মেলন মানেই কর্মকর্তাদের বক্তব্যের মহড়া। আজও ব্যতিক্রম ছিল না। সাফ অ-১৯ নারী দলে সহকারী টিম লিডার করা হয়েছে বাফুফের দুই সদস্যকে। এর মধ্যে একজন হাজী টিপু সুলতান আজ সম্মেলনে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি এক মাসের বেশি সময় রাজনৈতিক কারণে জনবিচ্ছিন্ন অবস্থায়। এমন একজনকে দলের সঙ্গে যুক্ত করার কারণ সম্পর্কে মহিলা ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, ‘তিনি এখন দলের সঙ্গে থাকতে পারবেন তাই রাখা হয়েছে। তাছাড়া তিনি বাফুফের নির্বাহী সদস্য ও মহিলা ফুটবল কমিটিরও সদস্য।’
জাতীয় দলের কোচ হিসেবে সাইফুল বারী টিটুর চুক্তি শেষ হয়েছিল ৩১ ডিসেম্বর। সাবেক টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলির আসার কথা ছিল পুনরায়। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের অসুস্থতায় সেই প্রক্রিয়া পিছিয়েছে তাই টিটু দায়িত্ব অব্যাহত রেখেছেন। টিটুর দায়িত্বের মেয়াদ নিয়ে তাই মন্তব্য করলেন না নারী উইংয়ের প্রধান কিরণ, ‘আজকের প্রসঙ্গ নিয়েই আমরা আলোচনা করছি। উনি আমাদের সঙ্গে রয়েছেন এজন্যই তো এখানে আছেন।’
বাংলাদেশের ম্যাচ সমূহ
২ ফেব্রুয়ারি- বাংলাদেশ বনাম নেপাল
৪ ফেব্রুয়ারি- বাংলাদেশ বনাম ভারত
৬ ফেব্রুয়ারি- বাংলাদেশ বনাম ভূটান
৮ ফেব্রুয়ারি- ফাইনাল
*বাংলাদেশের প্রতিটি ম্যাচ সন্ধ্যা সাতটায়। ভেন্যু কমলাপুর স্টেডিয়াম।