অনুপ্রবেশকারী ২৩ রোহিঙ্গাকে আদালতে প্রেরণ, রিমান্ড চায় পুলিশ
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪, ১০:৫৬ দুপুর
ছবি সংগৃহীত
মিয়ানমারে সংঘাতের মধ্যে বাংলাদেশে অস্ত্রসহ প্রবেশকারী ২৩ রোহিঙ্গা নাগরিকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। পরে আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) শুনানির দিন ধার্য করে আদেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে অস্ত্রসহ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী সেই ২৩ নাগরিকই রোহিঙ্গা। তাদের বেশিরভাগই উখিয়ার বালুখালীর বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। অন্যরা কুতুপালংসহ বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা। তাদের অনেকেই বিভিন্ন মামলার আসামি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বিজিবির দায়ের করা অস্ত্র মামলার ২৩ জনকেই শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে কক্সবাজার আদালতে উপস্থাপন করে তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা উখিয়া থানার পরিদর্শক নাছির উদ্দিন মজুমদার বলেন, এই রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ছেড়ে কেন মিয়ানমারে গেলেন আর তাদের হাতে অস্ত্র কেন- এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তাদের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানান, অনেক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাংলাদেশে অপরাধ করে মিয়ানমারে গিয়ে আত্মগোপনে থাকতেন। এই ২৩ জনও এ ধরনের সন্ত্রাসী বলে দাবি করা হচ্ছে। ফলে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। তখন নিশ্চিত হওয়া যাবে এরা সন্ত্রাসী কি না। ২৩ জনের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংশ্লিষ্ট নানা অপরাধে মামলা রয়েছে বলে উখিয়া থানার ওসি মো. শামীম হোসেন জানিয়েছেন।
২৩ জনের পরিচয়: বিজিবি-৩৪ ব্যাটালিয়নের পালংখালী বিওপির নায়েব সুবেদার মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে দায়ের করা অস্ত্র মামলার এজাহারে ২৩ জনের নাম-ঠিকানা রয়েছে। তারা হলেন উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর ক্যাম্পের মৃত কবির আহমদের ছেলে মো. হোসেন আহমদ, একই ক্যাম্পের মো. ইউনুসের ছেলে মো. রফিক, আ. রাজ্জাকের ছেলে আয়াতুল্লাহ, ৯ নম্বর ক্যাম্পের মো. রফিকের ছেলে মো. জুনাইদ, একই ক্যাম্পের নুর কালামের ছেলে মো. হারুন, সমসের আলমের ছেলে মো. কায়সা, রশিদ আহমেদের ছেলে মো. সাবের, ১০ নম্বর ক্যাম্পের আবদুল্লাহর ছেলে ওসামা, একই ক্যাম্পের জাফর আলমের ছেলে ওমর ফারুক, মো. তোহার ছেলে মো. সাদেক, মকবুল আহমদের ছেলে হারুন অর রশিদ, হামিদ হোসেনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত, দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. ইসমাইল, মো. হোসেনের ছেলে মো. রহিম, ১১ নম্বর ক্যাম্পের আতা উল্লাহর ছেলে নজু মোল্লা, ১৫ নম্বর ক্যাম্পের মো. সৈয়দের ছেলে সৈয়দ উল্লাহ, একই ক্যাম্পের দিল মোহাম্মদের ছেলে হাফেজ আহমেদ, ২০ নম্বর ক্যাম্পের মো. রশিদের ছেলে মো. জোবায়ের, কুতুপালং এলাকার ৬ নম্বর ক্যাম্পের ইউসুফের ছেলে আব্দুল্লাহ, একই এলাকার ৩ নম্বর ক্যাম্পের আবুল হাসেমের ছেলে এনামুল হাসান, ২ ক্যাম্পের ইমাম হোসেনের ছেলে মো. রফিক, একই ক্যাম্পের মৃত আবুল কালামের ছেলে সৈয়দুল ইসলাম, ৭ নম্বর ক্যাম্পের মৃত মো. জলিলের ছেলে মো. আরমান।
উদ্ধার ১২ অস্ত্র ও ৮০০ রাউন্ড গুলি: তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১২টি অস্ত্র। এসএমজি ৫টি, জি-৩ রাইফেল ১টি, পিস্তল ২টি, রিভলভার ৪টি। গুলির মধ্যে রয়েছে এসএমজি গুলি ১৯৮ রাউন্ড, এমজি গুলি ৯৮ রাউন্ড, রাইফেলের গুলি ২৭৬ রাউন্ড, জি-৩ রাইফেলের গুলি ১০৩ রাউন্ড, পিস্তলের গুলি ১৯৩ রাউন্ড, পিস্তলের ব্ল্যাংক কার্তুজ ২৫ রাউন্ড, রাইফেলের গ্রেনেড ফিউজ ৫ রাউন্ড, এসএমজি ম্যাগাজিন ৬টি, এলএমজি ম্যাগাজিন ৪টি, জি-৩ ম্যাগাজিন ১টি, পিস্তল ম্যাগাজিন ২টি।