পীরগঞ্জে জনপ্রিয় হচ্ছে ধানের চারা রোপন যন্ত্র ট্রান্সপ্লান্টার
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ০৩:২২ দুপুর
ছবি সংগৃহীত
কম সময়ে ধান রোপন এবং চারা গাছ কম লাগায় পীরগঞ্জে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ধানের চারা রোপন যন্ত্র (ট্রান্সপ্লান্টার)। বিগত চার বছর ধরে উপজেলায় পরীক্ষামূলক ভাবে ধানের চারা লাগানোর জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের তদারকীতে খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় জমিতে এই রোপন পদ্ধতি চলতি মৌসুমেও চলমান রয়েছে।
ফলন বাড়াতে সমলয় পদ্ধতিতে যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে আমন ধান রোপন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। সম্প্রতি পীরগঞ্জ উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
আগের বছর উপজেলার শানেরহাট ও বড়দরগাহ ইউনিয়নে একই পরিমান জমিতে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপন করা হয়েছিল। কৃষি যান্ত্রিকীকরনের এই পদ্ধতি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তাই চলতি মৌসুমে উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নের গ্রামে সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হচ্ছে। ৫০ একর জমিতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। একই জাতের বীজ একই সময়ে ট্রের মাধ্যমে বসানো হয় ২০শতাংশের জমিতে। যা এবার ৫০ একর জমিতে রোপন করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
ধল্লাকান্দির কৃষক সাহেব মিয়া, ইসমাইল হোসেন, আবুল প্রধান, পাহাড়পুরের জাকির প্রধান, ছকু মিয়া ও রাসেল মিয়া জানান, সময়ের ব্যবধানে বিগত কয়েক বছর থেকে প্রযুক্তি ও যন্ত্র ব্যবহারে কৃষকদের কষ্ট অনেকটা লাঘব হয়েছে। এখন শ্রমিকদের অপেক্ষায় দিন গুণতে হয় না কৃষকদের। প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ ব্যবহারের ফলে স্বল্প সময়ে কয়েক বিঘা জমি চাষাবাদ করা হচ্ছে। যন্ত্র ব্যবহারের ফলে সময় এবং টাকা দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, এই পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপন অনেক ভালো, সময় ও শ্রমিক খরচ কম লাগে। রোপনে শৃংখলা এবং ধানের ফলন অনেক বাড়াবে বলে আশা করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজামান সরকার জানান, বিগত চার বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষি যান্ত্রিকীকরণের এই পদ্ধতি চালু হয়েছে। এই পদ্ধতির ফলে চারা কম লাগে ফলনও অনেক ভালো হয়। আশা করছি কৃষকদের চাহিদার কারণে এই পদ্ধতি আগামীতে আরো বেশী প্রসার ঘটবে।
কৃষিতে একই জাত ব্যবহার, ট্রেতে বীজ বপন, কম বয়সের চারা রোপন, চারা রোপনে রাইচ ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহার, সুষম সার ব্যবহার, আইল ফসল, ধান কর্তন, পরিস্কার এবং প্যাকেজিংয়ে কম্বাইন হার্ভেস্টারের ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো উৎপাদন বাড়ানো এবং কম সময়ে স্বল্প মুল্যে শ্রম সাশ্রয়ী প্রযুক্তি।
সমলয় চাষাবাদে উৎপাদন খরচ সাশ্রয় এবং কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ভরা মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের সংকটের সমাধান সম্ভব হবে। উল্লেখ্য যান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাইচ ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ৪৫ থেকে ৬০ মিনিটে এক বিঘা জমিতে চারা রোপন করা যাবে। এ বিষয়ে কৃষকদের কারিগরি সুবিধা ও সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।