তফসিল প্রত্যাখ্যান জামায়াতের, রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৩, ০৭:৫৩ বিকাল
ছবি সংগৃহীত
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম এক বিবৃতিতে জানান, ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিরোধী দল ও দেশবাসীর মতামত উপেক্ষা করে জনধিকৃত ও সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। সমগ্র জাতি এবং বাংলাদেশ জামায়াতসহ দেশের অধিকাংশ বিরোধী দল তথাকথিত নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফরমায়েসি তফসিল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।
তিনি বলেন, আমরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, বিরোধী দলের মতামত অগ্রাহ্য করে ঘোষিত তথাকথিত তফসিল দেশকে অস্থিতিশীল ও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। সংলাপের পথ রুদ্ধ করবে। রাজনীতিতে ঘোর অমানিশা নেমে আসবে। একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের ফলে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতির দায় ষড়যন্ত্রকারী সরকার এবং আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে।
এ টি এম মা’ছুম বলেন, গণতন্ত্রের লেবাসধারী স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার নাগরিকদেরকে ভোট দিতে দেয়নি। সাজানো প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে। জামায়াতসহ বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিরোধী দলের বহু শীর্ষ নেতাকে জেলে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। বিরোধী দলের অসংখ্য নেতাকর্মী এখনও বন্দি। মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হয়রানি করা হচ্ছে। সরকারি দল সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও বিরোধী দলকে কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। লেভেল প্লেইং ফিল্ড এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার জন্য বিরোধী দলের সকল শীর্ষ নেতা এবং গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদেরকে মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা ও সাজানো মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সভা-সমাবেশ ও মিটিং করার সুযোগ দিতে হবে। স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকার ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনের দিকেই হাঁটছে।
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি বলেন, দেশবাসী মনে করে, ষড়যন্ত্রমূলক নীলনকশার তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন মূলত বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে অতীতের মতো শাসকদলকে জিতিয়ে আনার কৌশল নিয়েছে। গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনতা সরকারের বিনা ভোটে ক্ষমতা দখলের দিবাস্বপ্ন পূরণ হতে দিবে না। জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে কমিশনকে অবশ্যই এ তফসিল প্রত্যাহার করতে হবে। সকল দলের মধ্যে ঐকমত্য ও সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত করে কমিশনকে নতুনভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
এ টি এম মা’ছুম বলেন, আমি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের গণতন্ত্র হত্যার ফরমায়েসি তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে সারাদেশে আগামী ১৯ নভেম্বর ভোর ৬টা থেকে ২১ নভেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি।
ঘোষিত হরতাল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সফল করে তোলার জন্য জামায়াতের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও সংগ্রামী দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।