ঢাকা, রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১

হরতালে রাজধানীতে বাস কম, সতর্ক অবস্থানে পুলিশ

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৩, ০৯:২৮ সকাল  

ছবি সংগৃহীত

সংঘর্ষ আর মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার জন্য ক্ষমতাসীনদের দায়ী করে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করছে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে থাকা বিএনপি। 


রোববার সকালে হরতালের প্রথম ভাগে রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহন দেখা গেছে তুলনামূলকভাবে কম। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য রাস্তায় বেরিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। 


নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দেখা গেছে বিপুল সংখ্যক পুলিশের সতর্ক উপস্থিতি। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতেও পুলিশকে অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা গেছে। 


রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মুগদা, মালিবাগ, মৌচাক, রামপুরা, কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নগর পরিবহনের বাস চলছে কম। তবে রাস্তায় রিকশা ও অটোরিকশা চলছে, ব্যক্তিগত গাড়িও আছে কিছু। 


সকালে কাজের জন্য রাস্তায় বের হওয়া মানুষকে বিভিন্ন মোড়ে যানবাহনের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। রায়েরবাগ এলাকায় দাঁড়িয়ে দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় পর পর বাস এলে ঠাসাঠাসি করে তাতে ওঠার চেষ্টা করছিলেন সবাই। 
ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতি হরতালের মধ্যেও বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলতে দেখা যায়নি। গণপরিবহন না থাকায় যে যেভাবে পারছিলেন, গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন। ভ্যান বা ট্রাকের পেছনে করেও অনেকে যাচ্ছিলেন।


জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে শনিবার সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। ২০ শর্তে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ।
শনিবার দুপুরের আগে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরুর পর কাছেই কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। শান্তিনগর, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং দৈনিক বাংলা মোড় এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।


সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেওয়া হয়, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করা হয় আরো ডজনখানেক যানবাহন।দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘাতে প্রাণ যায় যুবদলের মুগদা থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা শামীম মোল্লার।


এছাড়া বিএনপি নেতাকর্মী, পুলিশ, সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অনেকেই। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অন্তত ৪১ জন‌ সদস্য আহত হয়েছেন। বিএনপির দাবি, পুলিশের হামলায় সহস্রাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।


সংঘর্ষের মধ্যে বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাতে এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “গ্রেপ্তার করে, বাস, ট্রেন, লঞ্চ পারাপার বন্ধ করে দিয়ে সরকার আমাদের মহাসমাবেশ ঠেকাতে পারেনি। তারা যখন দেখেছে, বাধা উপেক্ষা করে লাখ লাখ লোক মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছে, তখন তারা পরিকল্পিতভাবে হামলা করে আমাদের মহাসমাবেশকে পণ্ড করে দিয়েছে।


“ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার সম্পূর্ণ মাস্টার প্ল্যান করে বিএনপির সমাবেশে হামলা করিয়েছে। আমি আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাশাপাশি শনিবার সমাবেশ ডেকেছিল জামায়াতে ইসলামীও। অনুমতি না মেলায় তারা মতিঝিলের শাপলা চত্বরে যেতে না পারলেও পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আরামবাগে ঠিকই সমাবেশ করে।
পরে শনিবার সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে জামায়াতও রোববার হরতালের ঘোষণা দেয়।


এদিকে বিএনপি ঘোষিত হরতালের দিন আওয়ামী লীগ সারা দেশে জেলা ও থানা পর্যায়ে ‘শান্তি সমাবেশ’ করবে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক কাদের।নেতাকর্মীদের পাড়া মহল্লায় সতর্ক পাহারায় থাকার নির্দেশ দিয়ে শনিবার ঢাকার শান্তি সমাবেশে তিনি বলেন, "আপনারা সতর্ক থাকবে, পাড়া মহল্লায় সতর্ক পাহারায় থাকবেন।


সারা দেশে বিএনপির সকাল-সন্ধ্যা হরতালের মধ্যে বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছিল ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।


শনিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, "বিএনপি, জামায়াত, শিবিরের ডাকা আগামীকালের হরতালে ঢাকা শহর, শহরতলী ও আন্তঃজেলা রুটে বাস মিনিবাস চলাচল অব্যাহত থাকিবে।"