ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি যুদ্ধ
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই সংঘাতের প্রকৃত সমাধানঃজাতিসংঘের মহাসচিব
প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৩, ১১:৩৮ রাত
ছবি সংগৃহীত
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, ইসরায়েলে হামাসের ‘নিন্দনীয় হামলার’ জবাবে ফিলিস্তিনি জনগণকে সম্মিলিত শাস্তিদান কখনই ন্যায্য হতে পারে না। হামাস-ইসরায়েল চলমান যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিক, হাসপাতাল, স্কুল এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কার্যালয়সহ বেসামরিক অবকাঠামোকে বোমা হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
যুদ্ধের ‘বৃহৎ প্রেক্ষাপটের’ দিকে ইঙ্গিত করে গুতেরেস বলেছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানই ‘প্রকৃত শান্তি ও স্থিতিশীলতার একমাত্র বাস্তব ভিত্তি।তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলিদের নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই তাদের বৈধ চাহিদার বাস্তবায়ন দরকার। একই সাথে ফিলিস্তিনিদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য তাদের বৈধ আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নও দরকার।’
অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন,গাজায় মানবিক ত্রাণ সহায়তার টেকসই বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘ সব পক্ষের সাথে চব্বিশ ঘণ্টাই কাজ করছে।‘তবে গাজার জনগণের আরও অনেক কিছুর জন্য প্রতিশ্রুতি দরকার।সেখানকার বর্তমান চাহিদা পূরণ করার জন্য সহায়তার সরবরাহ অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। সীমান্তের এক পাশে ট্রাক বোঝাই আর অপর পাশে খালি পেট।
শনিবার প্রতিবেশী মিসরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজা উপত্যকায় ত্রাণবাহী ২০টি ট্রাক পৌঁছেছে। খাদ্য, পানি ও ওষুধবাহী এসব ত্রাণের ট্রাককে গাজার বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর জন্য ‘মহাসাগরে এক ফোঁটা পানির’ সঙ্গে তুলনা করেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা।
ইসরায়েলের সাথে চলমান যুদ্ধে দর কষাকষিতে হামাসের অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠেছে নিজেদের হাতে বন্দী করে রাখা ইসরায়েলি জিম্মিরা। দুই সপ্তাহ আগে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে স্থল হামলার পরিকল্পনা করলেও জিম্মিদের কারণে তা বাস্তবায়নে কালক্ষেপণ করছে। শনিবার হামাসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত জিম্মি সৈন্যদের মুক্তি দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুনঃ গাজার আবাসিক এলাকায় হামলা ইসরায়েলের, নিহত ৩০
লেবানন থেকে টেলিভিশনে সরাসরি সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হামাসের কর্মকর্তা ওসামা হামদান। তিনি বলেছেন, হামাস বর্তমানে বন্দী ইসরায়েলি সৈন্যদের বিনিময়ের আলোচনা টেবিলের বাইরে রেখেছে।
হামাসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসরায়েলি বন্দী সৈন্যদের বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট : এটা বন্দীদের বিনিময়ের সাথে সম্পর্কিত এবং গাজা ও ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করব না।’
শনিবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি সাংবাদিকদের বলেছেন, হামাসের যোদ্ধারা গাজা উপত্যকায় ২১০ জনকে জিম্মি করে রেখেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মাঝে হামাস দুই মার্কিন জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়ার পর হ্যাগারি জিম্মিদের এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেন।
দুই সপ্তাহ ধরে নিজেদের আস্তানায় ওই দুই মার্কিন নাগরিককে আটকে রেখেছিলেন হামাসের যোদ্ধারা। তাদের মুক্তির পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সব জিম্মিকে মুক্ত করার জন্য ইসরায়েল কাজ চালিয়ে যাবে।
২৪ ঘন্টা আপডেট নিউজ পেতে bdtribune24/বিডিট্রিবিউন২৪ এর ফেসবুক পেজ ফলো করুন
গত ৭ অক্টোবর ভোরের দিকে মুহুর্মুহু রকেট নিক্ষেপের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে হামাস। দুই সপ্তাহ ধরে চলমান এই যুদ্ধে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের চালানো হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আর ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৮৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও ১৩ হাজার ৫৬১ জন আহত হয়েছেন।
সূত্র: আলজাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল।