ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

‘নির্মম’ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে লজ্জার হার অস্ট্রেলিয়ার

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৩, ১০:২৯ রাত  

ছবি সংগৃহীত

ফেভারিট হিসেবে বিশ্বকাপে এলেও ভারতের কাছে হেরে খানিকটা ব্যাকফুটে ছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই নিয়েছে সাউথ আফ্রিকা। ৩১২ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয়ার পর বল হাতে অজি ব্যাটারদের রীতিমতো নাভিঃশ্বাস তুলেছেন কাগিসো রাবাদা, মার্কো জেনসেনরা। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে মার্কাস স্টইনিস ও স্টিভ স্মিথের বিতর্কিত আউট। পুরো ম্যাচে প্রোটিয়াদের চ্যালেঞ্জ জানাতে না পারা অস্ট্রেলিয়া ১৭৭ রানে থামলে হারতে হয় ১৩৪ রানের বড় ব্যবধানে। ফলে টানা দুই ম্যাচে হারতে হলো প্যাট কামিন্সের দলকে।

জয়ের জন্য ৩১২ রান তাড়ায় শুরু থেকেই চাপে ছিলেন দুই ওপেনার মিচেল মার্শ ও ডেভিড ওয়ার্নার। তাদের দুজনের কেউই সুবিধা করতে পারছিলেন না। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে এসে সাউথ আফ্রিকাকে ব্রেক থ্রু এনে দেনে জেনসেন। বাঁহাতি এই পেসারের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাভুমার হাতে ক্যাচ দিয়ে ৭ রানে ফিরেছেন মার্শ। আরেক ওপেনার ওয়ার্নার আউট হয়েছেন পরের ওভারেই। 

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের স্পিন সামলাতে প্রস্তুত নিউজিল্যান্ড

লুঙ্গি এনগিদির বলে ভ্যান ডার ডাসেনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ১৩ রান করা ওয়ার্নার। ভালো শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি স্মিথ। খানিকটা আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। রাবাদার বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়তে হয় তাকে। আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নেন স্মিথ। যেখানে প্রথমবার দেখা যায় বলটি লেগ স্টাম্পের উপর দিয়ে যেতো। পরক্ষণেই অবশ্য বদলে যায় সেটি। আউট দিলেও স্মিথ সেটি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। 

১৯ রান করা এই ব্যাটারকে ফেরানোর পর জশ ইংলিসকে বোল্ড করেছেন রাবাদা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও ৩ রানের বেশি করতে পারেনি। স্টইনিস সাজঘরে পথে ফিরেছেন আউট না হয়েই। রাবাদার বলে লেগ সাইড দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। বলে ব্যাটে না হলেও গ্লাভসে লেগে সেটি চলে যায় উইকেটকিপারের কাছে। বল যখন স্টইনিসের গ্লাভসে লাগে তখন তার হাতে ব্যাট ছিল না। নিয়ম অনুযায়ী এমনটা হলে ব্যাটার নট আউট থাকেন। 

যদিও আম্পায়ার স্টইনিসকে আউট দেন। ৭০ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর মার্নাস ল্যাবুশেন ও মিচেল স্টার্ক ৬৯ রানের জুটি গড়েন। স্টার্ক ২৭ রান করে ফিরলে ভাঙে এই জুটি। এদিকে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি ৪৬ রান করা ল্যাবুশেনের। শেষ দিকে কামিন্সের ২২ রান কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। সাউথ আফ্রিকার হয়ে রাবাদা তিনটি, কেশভ মহারাজ, জেনসেন ও তাবরােইজ শামসি নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করে সাউথ আফ্রিকা। টেম্বা বাভুমা ও ডি কিক মিলে প্রোটিয়াদের প্রত্যাশিত শুরুই এনে দিয়েছেন। পাওয়ার প্লেতে কোন উইকেট না হারিয়ে ৫৩ রান তোলেন তারা দুজন। যদিও বাভুমাকে দ্রুতই ফেরাতে পারত অস্ট্রেলিয়া। দুবার সুযোগ পেলেও সেটা লুফে নিতে পারেনি তারা। অ্যাডাম জাম্পার বলে উইকেটের পেছনে থাকা জশ ইংলিস ক্যাচ মিস করার পর স্টইনিসের বলে ক্যাচ নিতে পারেননি শন অ্যাবট।

এদিকে দারুণ ব্যাটিংয়ে ৫১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ডি কক। খুব বেশি স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং না করলেও হাফ সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন বাভুমা। তবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে ধরা পড়লে ভাঙে ‍ডি কিকের সঙ্গে ১০৮ রানের উদ্বোধনী জুটি। সাউথ আফ্রিকার অধিনায়ক আউট হয়েছেন ৫৫ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে। ভালো শুরু করলেও ইনিংস বড় কর পারেননি আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রাসি ভ্যান ডার ডাসেন।

জাম্পার বলে লং অনের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে অ্যাবটের হাতে ধরা পড়েন ২৬ রান করা এই ব্যাটার। ডাসেন ফিরলেও সেঞ্চুরি তুলে নেন ডি কক। কামিন্সের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে ৯০ বলে একশ ছুঁয়েছেন। বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচেই সেঞ্চুরির দেখা পেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। যদিও সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ খেলতে পারেননি তিনি।

ম্যাক্সওয়েলের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ১০৯ রানের ইনিংস খেলে। এদিকে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মার্করাম হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৪১ বলে। যদিও আউট হয়েছেন ৫৬ রানের ইনিংস খেলে। হেনরিখ ক্লাসেনের ২৯ এবং শেষ দিকে মার্কো জেনসেনের ২৬ রানের উপর ভর করে ৩১১ রানের পুঁজি পেয়েছে সাউথ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি করে উইকেট পেয়েছেন স্টার্ক ও ম্যাক্সওয়েল।