রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনে ৩ দিনই যথেষ্ট: ফখরুল
প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৩, ১১:৩১ রাত
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনে ‘তিন দিনই’ যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আপাতত নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোনো ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। বুধবার (১১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশন নভেম্বরে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে, এসময়ের মধ্যে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বদলে বিএনপি লাগাতার কর্মসূচি দিচ্ছে, সেখানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন করে বিএনপির নির্বাচনে যেতে আরো কত সময় লাগবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি ওই কথা বলেন।
আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ভাবনা কি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি, এভাবে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। আমরা বলে দিয়েছি, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো ভাবনা নেই, ভাবনা একটাই, এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশের কোনো মুক্তি নেই। আওয়ামী লীগের পদলেহি দলগুলো ছাড়া দেশের আর কোনো দল বলছে না যে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
আরও পড়ুনঃ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন পর্যবেক্ষক দলের সাক্ষাৎ
সরকার দেশকে সাংঘর্ষিক অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সরকারের লক্ষ্যটাই হচ্ছে একটা সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি করে আবার সেই আগের ১৪ এবং ১৮ সালের মতো নির্বাচন করা। একতরফা ভোটার ছাড়া কোনো ভোটার থাকবে না। আর এভাবে নির্বাচন করে দেখিয়ে দেবে যে নির্বাচন হয়েছে। এটা এবার আর সম্ভব হবে না।
নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি কোনো সংলাপে যাবে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা দেশে আছেন, তারা আগামী নির্বাচনের পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি পাঠাবে না সে বিষয়ে কথা বলছেন। দেশে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ পরিস্থিতি আছে কি না সেটা দেখার জন্য তারা এসেছেন। আমাদের খসরু সাহেব তাদেরকে পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেওয়া ছাড়া এ অবস্থায় দেশে কোনো নির্বাচন হতে পারে না।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপি নির্বাচনের বিষয়ে সংলাপের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এটা যে কত বড় মিথ্যা কথা তা সবাই জানে। আমরা বরাবরই বলে আসছি, একটা বিষয়ে আলোচনা হতে পারে, এছাড়া আর কোনো আলোচনা হবে না। আর সেটা হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয় বা নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনের বিষয় ছাড়া আর কোনো বিষয়ে আলোচনা হবে না। তবে আমরা কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকার বুঝাচ্ছি না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের কথা আমরা বলছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যদি ঘোষণা দেয় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়ে তারা আলাপ করবে, তাহলে আমরা তাদের সঙ্গে সংলাপে বসবো।
আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক দল আখ্যায়িত করে ফখরুল বলেন, তাদের বডি কেমিস্ট্রিতে দুইটি বিষয় আছে, একটি সন্ত্রাস ও অন্যটি হচ্ছে দুর্নীতি। এই দুটোর বাইরে আওয়ামী লীগ কখনোই যায় না। আর যে কারণে আজকে জনগণের এই লড়াই এবং সংগ্রাম। এটা প্রতিদিনই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। আর আমরা বিশ্বাস করি, অতি দ্রুত এই সরকার জনগণের রুদ্ররোষের শিকার হয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমূখ।