ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শীতের আগমনে খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত বরিশালের গাছিরা

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৩, ০৫:৩৬ বিকাল  

ছবি সংগৃহীত

জেলার বিভিন্ন গ্রামে চলছে খেজুর গাছ থেকে রস ভাঙ্গার মৌসুম। পুরুষ কর্মীরা সকালেই ছুটছেন রসের ভাড় নামাতে। আর নারী কর্মীরা তৈরি করছেন নানা স্বাদের গুড়।

সরোজমিনে দেখাগেছে, জেলায় কম বেশি প্রায় প্রতিটি উপজেলায় খেজুর গাছের রস সংগ্রহের ব্যস্ত গাছিরা। তবে আগের তুলনায় বর্তমানে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এ ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। জেলায় এক সময় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল। বর্তমানে খেজুর গাছের সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে। অল্প হলেও বর্তমানে খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ জেলার প্রায় সব কয়টি উপজেলা পর্যায়ের গাছিরা।

জেলার সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম এলাকার গাছি মোসলেম কাজী ও মো: দিলদার মাঝি বলেন, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের মাথার অংশকে ভালো করে পরিষ্কার করতে হয়। এরপর পরিষ্কার সাদা অংশ কেটে বিশেষ কায়দায় ছোট-বড় কলসিতে (মাটির পাত্র) রস সংগ্রহ করা হয়। ছোট বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই আমরা কোমরে রশি (দড়ি) বেঁধে গাছে ঝুলে রস সংগ্রহের কাজ করি। প্রতিদিন ি বকেলে ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) গাছে বাঁধি, সকালে রস সংগ্রহ করি। কেউ কেউ কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রি করেন। আবার কেউ কেউ সকালেই এ রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করেন।সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের গাছি সরিফুল গাজীর বলেন, শীত মৌসুমের শুরুতেই আমরা খেজুর গাছের রস সংগ্রহের কাজ করে থাকি। বছরের এ শীত মৌসুমেই কয়েক মাস আমরা খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে থাকি। এ রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি।

এব্যপারে সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্না বলেন, বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে, তাতে এক সময় হয়তো আমাদের এলাকায় খেজুর গাছ থাকবে না। এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের সবার উচিত বেশি করে খেজুর গাছ লাগানো এবং তা যতœ সহকারে বড় করা। তবে সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী আমি ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে খেজুর গাছ কাটতে দেই না।

এ ব্যপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ মুরাদুল হাসান বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু এ খেজুর গাছের রস। শীত মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকেন গাছিরা। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি এক ধরনের শিল্প। এর জন্য দরকার হয় বিশেষ দক্ষতা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল।খেজুরের রস থেকে বিভিন্ন রকমের গুড় তৈরি করে থাকেন গাছিরা।