ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

‘৬০ টাকার চিনি এখন ১৪০ টাকায় কিনতে হচ্ছে’

নিউজ ডেক্স

 প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৩, ১২:৫৯ দুপুর  

ছবি সংগৃহিত

নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে দাম বেড়েছে চিনির। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি চিনিতে ২০ টাকা দাম বেড়েছে। আগে বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এ চিত্র দেখা গেছে। বাজারে খোলা চিনি পাওয়া গেলেও মিলছে না প্যাকেটজাত চিনি। গত এক সপ্তাহ ধরে প্যাকেটজাত চিনি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজার নিয়ন্ত্রণে চলতি মাসের শুরুতে চিনির আমদানির শুল্ক অর্ধেকে কমিয়ে আনে সরকার। পাইকারি ও খুচরায় শুল্ক কমানোর পর দাম কমার পরিবর্তে উল্টো বাড়তে থাকে। পাইকারিতে প্রতিমণ চিনির দাম ১০০ টাকা কমলেও খুচরা বাজারে বাড়ছে।

আরও পড়ুনঃ শীতের সবজির বাজার ‘গরম’

পাইকারী ব্যবসায়িরা বলছেন, সরকার শুল্ক কমালেও ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাজারে প্রভাব পড়ছে না। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, চিনির বাজারে প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই। যে কারণে ব্যবসায়ীরা কিছুদিন পরপর ইচ্ছেমতো দাম বাড়ান।

বামনসুন্দর এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দাম বাড়ার আর কিছু বাকি থাকলো না। ৬০ টাকার চিনি এখন ১৪০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। জিনিসের দাম যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে তো আমাদের বেতন বাড়েনি।’

গজারিয়া এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘দফায় দফায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের সঙ্গে এবার চিনির দাম বেড়েছে। এতে একশ্রেণির মানুষের পকেট ভারী হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষের কষ্ট বেড়ে যাচ্ছে।’

চট্টগ্রাম নগরীর খাতুগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারিতে প্রতিমণ চিনি বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৮৫০ টাকা। দুদিন আগে বিক্রি হয়েছে চার হাজার ৯৫০ টাকায়।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। এসব প্রথার অনেকগুলো আবার আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। চিনিসহ অন্যান্য পণ্য বেচাকেনায় ডিও স্লিপ ব্যবহার করা হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজারদর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এতে কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়।

মিরসরাই পৌর সদরের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে তীর, ফ্রেশসহ প্যাকেটজাত চিনি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। দোকানে শুধু খোলা চিনি রয়েছে। প্রতিকেজি চিনি ১৪০ টাকায় বিক্রি করছি।’

মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার দোকানি আব্দুল করিম শামীম বলেন, ‘প্রতিকেজি চিনি ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আমরা পাইকার থেকে বেশি দামে কিনেছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

বড়দারোগাহাট বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফিরোজ বলেন, ‘বাজারে চিনির সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। আবার চাহিদাও বেড়ে গেছে। তাই দামও বাড়ছে।’

এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান বলেন, ‘সরকার চিনির আমদানির শুল্ক অর্ধেকে কমিয়ে আনার পর পাইকারিতে দাম কিছুটা কমেছে। সে হিসেবে খুচরা দামও কমার কথা। আমি বাজারে গিয়ে মনিটরিং করবো। যদি অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হবে।

২৪ ঘন্টা আপডেট নিউজ পেতে bdtribune24/বিডিট্রিবিউন২৪ এর ফেসবুক পেজ ফলো করুন