‘স্ত্রীর মরদেহ বাড়িতে এনে শুনি হাসপাতালে আমার মেয়েটাও মারা গেছে’
প্রকাশিত: নভেম্বর ০৯, ২০২৩, ০৩:৩৫ দুপুর
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (৮ নভেম্বর) মেয়ে সাদিয়া বেগম (১২) ও এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মা সালমা বেগমের (৪০) মৃত্যু হয়।
মৃত দুইজন দশমিনা উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নেহালগঞ্জ গ্রামের দিনমজুর সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী সালমা বেগম এবং তাদের মেয়ে সাদিয়া। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে নেহালগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
দিনমজুর সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু থেকে আমার স্ত্রী ও ১২ বছরের মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না। আমি ছিলাম ঢাকায়। কয়েক দিন ধরেই আমার স্ত্রী বলেছিল তার শরীর অনেক খারাপ, গায়ে জ্বর। এর মাঝে আমার মেয়েটাও অসুস্থ হয়। আমার মেয়েকে নাপা ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছিল। কিন্তু তারপরও সুস্থ না হলে প্রাইভেটভাবে ডাক্তার দেখানো হয়। তারা দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হতে বলে। সেখানে ভর্তির পর স্বাস্থ্যের উন্নতি না হলে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমার স্ত্রী ও মেয়ে দুজনই চিকিৎসাধীন ছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে আমার স্ত্রী মারা যায় এরপর বুধবার মেয়েও মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার স্ত্রীর মরদেহ বাড়িতে এনে ভোর ৪টা দিকে শুনি হাসপাতালে আমার মেয়েটাও মারা গেছে। তারপর তাদের এক সঙ্গে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আমি আল্লাহর কাছে বলি এরকম যে কারো সঙ্গে না হয়।
বহরমপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জলিল মল্লিক বলেন, আমার জানামতে এই পরিবারটি তেমন সচেতন না। কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ও জ্বর থাকায় স্থানীয়ভাবে ডাক্তার দেখিয়েছে, তারপর বেশি আক্রান্ত হলে দশমিনা উপজেলা কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তারা বরিশালে শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানেই মা-মেয়ের মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে দশমিনা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই রোগীরা যখন আমাদের এখানে ভর্তি ছিল তখনই বেশি আক্রান্ত ছিল। গ্রামের মানুষ তো সচেতন কম ছিল। তারা স্থানীয়ভাবে জ্বরের চিকিৎসা চালিয়েছে। আমাদের কাছে যখন এসেছে তখন অবস্থা ভালো ছিল না। এজন্য আমরা বরিশালে রেফার করেছি। আমরা শুনেছি তারা দুজনেই মারা গেছেন তারপরও আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।