ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আপন চাচাকে কুপিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে র‌্যাব-৭ কর্তৃক গ্রেফতার

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৩, ১১:২১ রাত  

ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
 
নিহত ভিকটিম মোঃ ফারুক হোসেন চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানাধীন সহদেবপুর এলাকার বাসিন্দা। নিহত ভিকটিম স্থানীয় সাচার বাজারে একটি দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করে সংসার পরিচালনা করে আসছিল। ভিকটিমের আপন ভাতিজা মোঃ শরীফ হোসেন এর কোন কাজকর্ম না থাকায় ভিকটিম সাচার বাজারের একটি দোকানে কাজের ব্যবস্থা করে দেয়। পরবর্তীতে শরীফ হোসেন নিয়মিত কাজে না গেলে দোকান মালিক ভিকটিম ফারুক হোসেনের নিকট তার ভাতিজার কাজে অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চায়। গত ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ইং তারিখে ভিকটিম ফারুক হোসেন ভাতিজা শরিফকে কাজে যাওয়ার জন্য বললে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ফাতেমার উস্কানিতে ছেলে শরীফ হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে চাচা ফারুক হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরতর রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রতিবেশী লোকজনের সহায়তায় ভিকটিমকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে ভিকটিম মোঃ ফারুক হোসেনের অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের অবস্থার আরো অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার হৃদরোগ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। উক্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিম ফারুক হোসেন গত ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ মৃত্যুবরণ করেন।
 
 
উক্ত ঘটনায় নিহত ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানায় ০২ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৫, তারিখ-০৩ সেপ্টম্বর ২০২২, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলা দায়ের করার পর থেকে এজাহার নামীয় প্রধান আসামি মোঃ শরিফ হোসেন এবং তার মা ফাতেমা বেগম আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায়।
 
র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি মোঃ শরিফ হোসেন এবং তার মা ফাতেমা বেগম আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ছদ্মবেশে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখ আনুমানিক ১৭৩০ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামি ১। মোঃ শরিফ হোসেন (২০), পিতা-নবীর হোসেন এবং ২। মোছাঃ ফাতেমা বেগম (৩৮), স্বামী-নবীর হোসেন, উভয়ের সাং-সহদেবপুর, থানা-কচুয়া, জেলা-চাঁদপুরদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূত্রে বর্ণিত হত্যা মামলার পলাতক আসামি মর্মে স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় তারা আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে দীর্ঘ ১ বছর যাবৎ চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে আসছিল।
 
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।