ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

কক্সবাজারের সদর থানাধীন খুরুশকুলের কুলিয়াপাড়ায় দেশীয় তৈরী অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিরত অবস্থায় চক্রের ১৩ জন ডাকাত র‌্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার; দেশীয় তৈরী অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধার

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২৩, ০৩:৫৬ দুপুর  

ছবি সংগৃহীত

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সৃষ্টিলগ্ন থেকে বাংলাদেশে অপরাধ নির্মূলে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে। সম্প্রতি কক্সবাজারে চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাই এর প্রবণতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে পর্যটক ও স্থানীয় জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করতে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারী বৃদ্ধি করে। র‌্যাব-১৫ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় অপরাধের সাথে জড়িত চক্রগুলোকে গ্রেফতারসহ জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য র‌্যাবের আভিযানিক দল সদা অভিযান পরিচালনা করে আসছে। 

এরই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় সংঘঠিত চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাই এর সাথে জড়িত অপরাধীদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-১৫ অনুসন্ধানে নামে। একপর্যায়ে গত ১৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ র‌্যাবের আভিযানিক দল গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, কক্সবাজার জেলার সদর মডেল থানাধীন খুরুস্কুল ইউনিয়নের খুলিয়াপাড়া এলাকার রুল্লা খালের ব্রীজের রাস্তার পার্শ্বে ফয়জুল্লা মেম্বারের প্রজেক্টে একটি ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ সমবেত হয়ে ডাকাতি সংঘটনের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। উক্ত তথ্যের প্রেক্ষিতে রাত অনুমান ০৩.৫০ ঘটিকার সময় র‌্যাব-১৫, কক্সবাজারের সদর কোম্পানীর একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ডাকাত চক্রটি র‌্যাবের অভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ দিক-বিদিক দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টাকালে চক্রের ১৩ জন ডাকাতকে র‌্যাব গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং চক্রের অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন ডাকাত কৌশলে অন্ধকারে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে ধৃত ডাকাত চক্রের হেফাজত হতে সর্বমোট ০২টি রামদা, ০২টি কিরিচ, ০২টি ছুরি, ০৩টি কাটার, ০৬টি স্মার্ট ও ০৬টি বাটন ফোন এবং নগদ ৬,৬০০ (ছয় হাজার ছয়শত) টাকা উদ্ধার করা হয়। 

আরও পড়ুণঃ হলি আর্টিজান হামলা : হাইকোর্টের রায় ৩০ অক্টোবর

গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রের সদস্যদের বিস্তারিত পরিচয় :

১। শের আলী (৫২), পিতা-মৃত কালা মিয়া, মাতা-মৃত মাবিয়া খাতুন, সাং-খুরুস্কুল খুলিয়াপাড়া, সদর, কক্সবাজার। 
২। মোঃ নেজাম (৩২), পিতা-মৃত শামসুল আলম, মাতা-আনোয়ারা বেগম, সাং-রুমালিয়ারছড়া, পিটি স্কুল, সদর, কক্সবাজার।
৩। শামসুল আলম (৪২), পিতা-আব্দুল শুক্কুর, মাতা-দিলদার বেগম, সাং-খুরুস্কুল, খুলিয়াপাড়া, সদর, কক্সবাজার।
৪। চলা রাখাইন (২১), পিতা-মং ডেল, মাতা-ওয়ান শান, সাং-বড় বাজার, পশ্চিম, মাছবাজার, সদর, কক্সবাজার।
৫। মোঃ খালেদ মাহফুজুর রহমান ওয়াহিদ (২৬), পিতা-মৃত মেকানিক নজরুল ইসলাম সিকদার, মাতা-জয়নব আরা বেগম, সাং-সৈকত পাড়া, (নজরুলের বাড়ী), সদর, কক্সবাজার।
৬। মোহাম্মদ আজাদী হাসনাত শাওন (৩২), পিতা-মোঃ আনিছুর রহমান, মাতা-মমতাজ বেগম, সাং-আকবাগসোগা, নতুন বারেন্দা, জেলা-পাবনা। 
৭। মোহাম্মদ সোহেল (২১), পিতা-সোনা মিয়া, মাতা-মরিয়ম খাতুন, সাং-সমিতিপাড়া, সোনামিয়ার বাড়ী, সদর, কক্সবাজার।
৮। মোঃ শাহজাহান (২১), পিতা-শফি আলম, মাতা-রেহেনা আক্তার, সাং-দক্ষিন আদর্শগ্রাম, কলাতলী, সদর, কক্সবাজার।
৯। ওয়াহিদ (২১), পিতা-রমিজ আহাম্মদ, মাতা-মমতাজ বেগম, সাং-চাল বাজার, ফুল বাক সড়ক, সদর, কক্সবাজার।
১০। রহিম উল্লাহ (২৯), পিতা-মৃত হাবিবুর রহমান, মাতা-তৈয়বা খাতুন, সাং-মহাজনপাড়া, শফিউল্লাহবাড়ী, হসপিটাল সড়ক, সদর, কক্সবাজার।
১১। মোঃ রুবেল (২১), পিতা-মোঃ সিরাজ, মাতা-রৌশন আরা বেগম, সাং-চরপাড়া প্রধানের ডিল, রুবেলের বাড়ী, নাজিরেরটেক, সদর, কক্সবাজার।
১২। জুয়েল দে (২১), পিতা-রিপন দে, মাতা-মাধুরী দে, সাং-খুরুস্কুল, পূর্ব হামদার ডেল, সদর, কক্সবাজার।
১৩। আশিক উল্লাহ (২০), পিতা-রহমতুল্লাহ, মাতা-লায়লা, সাং-মহেশখালী, পুটিবিলা, মহেশখালী, কক্সবাজার। 

May be an image of flute and text that says 'R4B BANGLADESH BANGL বাংলাদেশ আমার হংকার RAB প্রেস ব্রিফিং র্যাব-১৫ কক্সবাজার। ELITE উন্ধারকৃত আলামত In'

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা র্দীঘদিন ধরে অপরাধমূলক নানাবিধ কর্মকান্ডের সহিত জড়িত রয়েছে মর্মে জানা যায়। আরো জানা যায়, চক্রটি একত্রে সমবেত হয়ে পরস্পর জ্ঞাতসারে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ উক্ত স্থানে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করছিল। এছাড়াও ইতিপূর্বে চক্রটি কক্সবাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটক ও স্থানীয় জনসাধারণকে অস্ত্র-শস্ত্রের ভয়-প্রীতি প্রদর্শন করে ডাকাতি ও ছিনতাই এর মত নানাবিধ অপরাধ সংঘঠিত করে আসছিল বলে জানা যায়। আটককৃত চক্রটির বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও বিভিন্ন থানায় অস্ত্র আইন, ডাকাতি প্রস্তুতি, মাদক, চুরিসহ কমপক্ষে ১৩টির অধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তারা একাধিকবার করে গ্রেফতারও হয়েছে।

উদ্ধারকৃত আলামতসহ গ্রেফতারকৃত ১৩ জন এবং চক্রের অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে কক্সবাজার জেলার সদর মডেল থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে ।