ঢাকা, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৪ কার্তিক ১৪৩১

নৌকাবাইচে উল্লাসে মাতল সাপাহারবাসী

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৩, ১১:৫৭ রাত  

সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবই বিলে হয়ে গেল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা

নওগাঁর সীমান্ত লাগোয়া জবই বিলের দুই পাড়ে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হাজার হাজার উৎসাহী মানুষের ঢল নামে। থেমে থেমে হর্ষধ্বনিতে মুখরিত বিল পাড়ের চারধার। বইঠার একটানা ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর মাঝি-মাল্লাদের কণ্ঠে কোরাস শোনা যায় ‘হেইও রে, হেইও, বৈঠা মাড়ো হেইও’। আর এভাবেই একেকটি নৌকা ছুটে চলছে।
এসময় হর্ষধ্বনি দিয়ে দলগুলোকে উৎসাহিত করতে থাকেন দর্শকরা। আনন্দ উল্লাসে পুরো এলাকা হয়ে পড়ে মুখরিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবই বিলে হয়ে গেল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন এই নৌকাবাইচের আয়োজন করে।
এতে অংশ নেয় নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ আশপাশের ছোট-বড় মিলে প্রায় ৮টি নৌকা।

আরও পড়ুনঃ উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনে ডিএমপির ২২ নির্দেশনা

সরেজমিনে দেখা যায়, এই নৌকাবাইচ উপভোগ করতে দুপুরের পর থেকেই তীব্র রোদ ও গরম উপেক্ষা করে জবই বিলের উৎসুক মানুষ জড়ো হতে থাকেন। বিকেল সাড়ে ৩টায় জবই বিলের মাহিল প্রান্ত থেকে নৌকাবাইচ শুরু হয়ে মাছ চত্বর এলাকায় শেষ হয়। নৌকাবাইচের দূরত্ব ছিল প্রায় ১ কিলোমিটার।
এ সময় বিলের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া সড়কের দুই পাশে মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। তাদের আনন্দ-উল্লাসে মুখরিত হয় বিলের চারপাশ।

নৌকাবাইচ দেখতে আসা সত্তরোর্ধ মোবারক আলী বলেন, ‘বাইচ দেখতি আমি দুপর ২টায় মধ্য এখানে আইছি। বাইচ দেইখে খুব আনন্দ পাইছি।’

স্থানীয় সালেমা বিবি নামে এক নারী বলেন, ‘আমার জীবনে প্রথম নৌকবাইচ দেখতে এসেছি।
এখানে এসে নৌকবাইচ দেখে আনন্দ পেলাম।’ প্রতি বছর এমন আয়োজন করার আহ্বান জানান তিনি।

নওগাঁ থেকে নৌকাবাইচ দেখতে আসা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘ফেসবুকের মাধ্যমে নৌকাবাইচ উৎসবের কথা জানতে পেরেছি। সকাল ১১টায় রওনা হয়ে এখানে এসেছি। এসে খুব ভালো লাগছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই নৌকবাইচ এখন বিলুপ্তির পথে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, ‘জবই বিল কেন্দ্রীক পর্যটন বিকাশে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিনিয়ত বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এরই একটি অংশ জবই বিলে নৌকাবাইচ। এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করায় আবহমান বাংলার চিরায়ত চিত্র ধরে রাখার পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে জবই বিল আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এতে স্থানীয়দের জীবন জীবিকায় পরিবর্তন আসবে।’

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘আবহমান গ্রাম-বাংলার সংস্কৃতি ধরে রাখতে ও জবই বিলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যর অংশ এই নৌকাবাইচ। নৌকাকবাইচকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের মাঝে যেন প্রাণ ফিরে এসেছে।’ আগামীতে আরো বড় পরিসরে এই ধরনের আয়োজন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।