ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় প্রকাশ্যে যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা মামলার পলাতক দুইজন আসামি’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৩, ০৪:৫৪ দুপুর  

ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
 
নিহত ভিকটিম মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৫) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের ব্রক্ষোত্তর গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক এবং একজন বালু ব্যবসায়ী। আসামিদের সাথে ভিকটিমের বালু মহল নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত বিরোধের জেরে আসামিগণ ইতোপূর্বে একাধিকবার ভিকটিমকে মারধর করাসহ প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করেছে। গত ০৮ অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখ বিকাল আনুমানিক ১৫৩০ ঘটিকায় ভিকটিম মঞ্জুরুল ইসলাম তার শান্তিনিকেতন বালুর মহলে অবস্থান কালে, আসামিগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উক্ত বালু মহলে আসে। অস্ত্রসজ্জিত আসামিদের দেখে ভিকটিম প্রাণ ভয়ে দৌড়ে পালানোর সময় আসামিরা ভিকটিমকে ধাওয়া করে বালুর মাঠেই এলোপাথাড়ি কুপাতে থাকে। কুপানোর একপর্যায়ে আসামিদের সাথে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ভিকটিম মঞ্জুরুল ইসলাম এর পায়ের উপরের অংশে ও নিম্নাংশে একাধিক গুলি করে গুরুতর জখম করে এবং ভিকটিমের সাথে থাকা মোঃ সেকান্দর (৩৮)’কেও মারধর করে জখম করে। এসময় তাদের আত্মচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরিক্ষা করে মঞ্জুুরুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।
 
 
উক্ত ঘটনায় নিহত ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানায় ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং ০৪/১৬৭, তারিখ ০৯ অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩২৩/৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।
 
র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত নৃশংস ও চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা কার্যক্রম ও ছায়াতদন্ত আরম্ভ করে। একপর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় ৩নং আসামি আলআমিন@সাগর চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানাধীন আব্বাছিয়া পুল এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১০ অক্টোবর ২০২৩ইং তারিখ আনুমানিক ২০৪৫ ঘটিকায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি অভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি ১। মোঃ আল-আমিন @সাগর (৩০), পিতা-মৃত রমজান আলী@মিন্টু সওদাগর, সাং-সৈয়দ বাড়ি, থানা-রাঙ্গুনিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতাকৃত আসামির দেয়া তথ্য মতে অদ্য ১১ অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখ রাত আনুমানকি ০০১০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন পাঁচলাইশ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার অপর আসামী ২। মোঃ ওবায়দুল কাদের @ওবায়দুল্লা @সুমন (৩৮) পিতা-মোঃ নবীর হোসেন @বাচা মিয়া, সাং-মুরাদ নগর পাঠান পাড়া, থানা-রাঙ্গুনিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিদ্বয়’কে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, তারা বর্ণিত হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করে।
No photo description available.
 
উল্লেখ্য, উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা রুজু হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রধান ও এজাহারনামীয় ১নং আসামি খান মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন @মঈন উদ্দিন @মঈনু (৪৫), পিতা-মৃত নুর মোহাম্মদ খান, সাং-মুরাদনগর, থানা-রাঙ্গুনিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। মামলার এজাহার নামীয় অন্যান্য পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যহত রয়েছে।
 
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।