ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য, বেড়েছে ১৩৭ হেক্টর জমিতে

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: জানুয়ারী ৩০, ২০২৪, ০৮:৩০ রাত  

ছবি সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য। অন্য ফসলের চেয়ে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং লাভজনক হওয়ায় জেলার কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরিষার আবাদ বেড়েছে ১৩৭ হেক্টর জমিতে। 

জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অফিস জানায়, চলতি বছর জেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার ৩৯২ হেক্টর জমি। কিন্তু চাষ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৬৮ হেক্টর জমিতে। তবে গত মৌসুমে আবাদ হয়েছিল ১৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। 

অর্থাৎ চলতি মৌসুমে গত মৌসুমের চেয়ে বাড়তি ১৩৭ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। এই মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় ২৮৫ হেক্টর, নবীনগর উপজেলায় ৪০৫০ হেক্টর, সরাইল উপজেলায় ১০৯২ হেক্টর, নাসিরনগর উপজেলায় ৬০৫০ হেক্টর, আশুগঞ্জ উপজেলায় ১১২০ হেক্টর, বাঞ্চারামপুর উপজেলায় ১৮৫০ হেক্টর, বিজয়নগর উপজেলায় ৫১০ হেক্টর, কসবা উপজেলায় ২৩৫ হেক্টর এবং আখাউড়া উপজেলায় ৪৯৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। 

সরজমিনে দেখা যায় সদও উপজেলাসহ , সরাইল, নাসিরনগর, বিজয়নগর, নবীনগর ও আশুগঞ্জে কৃষি জমিতে হলুদের সমারোহ। দিগন্ত জোড়া ফসলী মাঠ সরিষা ফুলের হলুদ রঙ্গে শোভিত। বাতাসে দোল খাচ্ছে সরিষার ফুল। হলুদ ফুলের হাসিতে এবার বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অফিস জানায়, বারি-১৪, ১৭ ও ১৮ সহ অন্যান্য সরিষা বপনের পর ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়। সরিষা উত্তোলন করে ফের একই জমিতে বোরো আবাদ করা যায়। সরিষা গাছের পাতা মাটিতে পড়ে জৈব সারে পরিণত হয়। এতে জমির উর্বরতা বাড়ে। সরিষা চাষে উৎপাদন ব্যয়ও কম। চাষের পর একই জমিতে ধান চাষ করলে সারও কম দিতে হয়। তাই এখানকার কৃষকরা ক্রমেই সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

সরিষা চাষী আবুল কাসেম, আবদুর রউফ ও আবু তাহের জানান, আগে তারা স্থানীয় টরি সেভেন, টিএস সেভেন্টি টু, এসএস সেভেন্টি ফাইভ জাতের সরিষা চাষ করতেন। চলতি মৌসুমে তারা অধিক ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। এই জাতের সরিষা ৮৫ থেকে ৯০ দিনে ঘরে তোলা যায়। ফলন হয় বেশি। 

আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়নের কৃষক আইয়ুব আলী জানান, তিনি গত ৭ বছর ধরে তার ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে আসছেন। চলতি বছর তিনি বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করছেন। সরিষার চাষ করতে তার বিঘা প্রতি প্রায় ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মুন্সি তোফায়েল আহমেদ জানান, চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ৩৯২ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু চাষ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৬৮ হেক্টর জমিতে। তবে গত মৌসুমের তুলনায় বাড়তি ১৩৭ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে।

অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, চলতি মৌসুমে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সরিষা চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় যদি না হতো তাহলে সরিষার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতো। আমরা সরিষা চাষীদের সব ধরনের সহায়তা করে আসছি। পাশাপাশি আমাদের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা তাদের সংশ্লিষ্ঠ ব্লকে সরিষা চাষে নিয়মিত তদারকি করছেন।