সাতক্ষীরায় উৎপাদিত সুপারীর বাজার এখন ২০ কোটি টাকার বেশি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২৩, ০১:০৮ দুপুর
ছবি সংগৃহীত
উপকুলীয় জেলা সাতক্ষীরাতে অর্থকরি ফসল সুপারীর উৎপাদন দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে বছরে এখন ৪৫০ টন সুপারী উৎপাদন হয়।যার বাজার মুল্য ২০ কোটি টাকারও বেশি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যানুযায়ী, অন্যান্য ফসলের তুলনায় উৎপাদনে তেমন খরচ না থাকায় জেলায় সুপারীর বাগান বাড়ছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ৩৫০ বিঘা জমিতে সুপারী উৎপাদন হয়েছে ৪৫০ টন। কেজি প্রতি শুকনা সুপারীর বাজার দর ৪৫০ টাকা। এ হিসাবে সুপারীর বাজার মুল্য ২০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। গত তিনবছরের ব্যবধানে জেলায় সুপারী আবাদ বেড়েছে প্রায় ২০০ বিঘা পরিমাণে। ২০২০-২১ অর্থবছরে জেলায় মোট সুপারী আবাদ ছিলো ১ হাজার ১৫০ বিঘা পরিমাণ। যা বর্তমান ১ হাজার ৩৫০ বিঘা হয়েছে।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলা কুমিরা গ্রামের কৃষক অরবিন্দু কুমার জানান, তার তিন বিঘা জমিতে সুপারী বাগান রয়েছে। নারকেল বা অন্যান্য ফসলী গাছগাছালীর সাথেই মুলত সুপারী গাছ লাগানো রয়েছে। তিনি বলেন, এসব সুপারী গাছে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ বছর যাবত ফল দিচ্ছে। বছরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা সুপারী বিক্রি হয়। এসব সুপারী স্থানীয় ব্যাপারীরা বাগান থেকে পাইকারী মুল্যে নিয়ে যায়। অরবিন্দু কুমার বলেন, তার গ্রামে প্রচুর পরিমাণ পান বরজের পাশাপাশি সুপারী বাগান রয়েছে কৃষকদের।
আরো পড়ুনঃ শেরপুরের গারো পাহাড়ে কাজু বাদাম চাষ হচ্ছে
জেলার পাইকারী সুপারী বিক্রয় মোকাম পাটকেলঘাটা বাজারে সপ্তাহে দুইদিন মঙ্গল ও শুক্রবার পাইকারী সুপারীর হাট বসে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর পরিমাণ সুপারী উঠে এই হাটে। স্থানীয় ছাড়াও পাশবর্তী যশোর ও খুলনা থেকে পাইকারী ব্যাপারী সুপারী সংগ্রহ করেন পাটকেলঘাটা থেকে। এ বাজারের সুপারী বিক্রয় আড়তদার হযরত আলী জানান, প্রতি সপ্তাহে দুইদিন মঙ্গল ও শুক্রবার তার আড়তে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার সুপারী ক্রয়-বিক্রয় হয়। জেলার বিভিন্ন এলাকার পাইকারী ব্যবসায়ীরা পাটকেলঘাটা থেকে সুপারী ও পান কিনতে আসেন।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ মোড়ের সুপারী ব্যবসায়ী বিপ্লব ভট্টচার্য সোনা বলেন, সুপারী কাঁচা বা শুকনা দুটোই ব্যাপক চাহিদা। তিনি প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ পান ও সুপারী বিক্রি করেন।কাঁচা সুপারী প্রতি হাজার ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা দরে কিনতে হয়। এছাড়া শুকনা সুপারী পাইকারী দর যাচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজি।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, পান ও সুপারী আমাদের দেশের খুবই অর্থকরি ফসল।সাতক্ষীরাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সুপারী উৎপাদন হচ্ছে। এখন অনেকে বাড়ির বসতভিটার সাথেই সুপারী বাগান করছেন, আবার কোনো-কোনো কৃষক সাথী ফসল হিসেবেও সুপারীর সাথে বিভিন্ন ফসল করছেন। তবে পান এবং সুপারী খুবই লাভজনক ফসল।